গ্রামাঞ্চলে সরকারি কাজে অনিয়ম হলেই এবার কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর। রাজ্যের পঞ্চায়েত স্তরে বিভিন্ন সরকারি কাজে চূড়ান্ত অনিয়মের অভিযোগ বিরোধীদের। বিশেষ করে ১০০ দিনের কাজে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে গত কয়েক বছরে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল রাজ্যে ঘুরে গিয়েছে। গ্রামে-গ্রামে ঘুরে তাঁরাও খতিয়ে দেখেছেন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। অভিযোগ, সরেজমিনে পরিস্থিত দেখে কেন্দ্রের প্রতিনিধিরাও দুর্নীতির গন্ধ পেয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে এবার পঞ্চায়েতস্তরে সরকারি কাজ নিয়ে জোরদার তৎপরতা রাজ্য সরকারের। অনিয়ম দেখলেই এফআইআর দায়েরের নির্দেশ। শুধু তাই নয়, আর্থিক তছরুপ হলে সেই টাকা উদ্ধারেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছেন।
বছর ঘুরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে বিন্দুমাত্র স্বস্তিতেও নেই রাজ্যের শাসকদল। এসএসসি দুর্নীতি থেকে শুরু করে গরু, কয়লা পাচারে ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর। এসএসসি দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থর পর গরু পাচার মামলায় সিবিআই জালে পুরেছে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে।
শুধু গরু, কয়লা বা শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি নয়, রাজ্যের গ্রামীণ এলাকাগুলিতেও পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ১০০ দিনের কাজের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ বিরোধীদের। সম্প্রতি এরাজ্যে এসে জেলায়-জেলায় ঘুরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। ১০০ দিনের কাজের পাশাপাশি বাংলা আবাস যোজনার কাজও তাঁরা খতিয়ে দেখেছেন। সূত্রের খবর, সেই দলটি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে জমা দেওয়া রিপোর্টে কার্যত বোমা ফাটিয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের একাংশের মদতে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি টাকার নয়ছয় হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- বুক ফুলিয়ে ঘুরছে বিলকিসের ধর্ষক-খুনিরা, সোমবার জরুরি বৈঠকে NHRC
দুর্নীতি রুখতে এবার আরও কড়া রাজ্য সরকারও। জানা গিয়েছে, রাজ্যের জেলা প্রশসানগুলিতে কড়া চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত এলাকার কাজে যে কোনও দুর্নীতি দেখলেই দ্রুত এফআইআর দায়ের করতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী সরকারি টাকা কেউ বা কারা আত্মসাৎ করলেও দ্রুত তা উদ্ধারে প্রশাসনকে সবরকম ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- ‘নতুন তৃণমূলে’র পর ফের কলকাতায় জোড়া-ফুলের পোস্টার, এবার ছবি মমতারও
তবে রাজ্যের এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করতে শুরু করে দিয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ''এক সময় কাটমানি ফেরতের লাইন পড়েছিল। কে কার বিরুদ্ধে এফআইআর করবে? কে কাকে ধরবে? নির্বাচনের আগে এটা রাজনৈতিক রূপচর্চার মতো।'' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ''১১ বছর সরকার চালানোর পর ওঁর এখন এফআইআর দায়েরের কথা মনে পড়ল?''