১১ বছরেও ছবিটার বদল হল না। জঙ্গলমহলে অভাব-অভিযোগের সমস্যা যেন ঘোঁচে না। মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে ফের একগুচ্ছ নালিশ নিয়ে সোচ্চার আদিবাসীরা। মন দিয়ে স্থানীয়দের অভাবের কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য দায় ঠেললেন কেন্দ্রের ঘাড়ে। তা নিয়েই উল্টে সরব বিরোধীরা।
জঙ্গলমহল সফরে গিয়ে ফের আদিবাসীদের গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে পেয়ে ঘর-জল নিয়ে একগুচ্ছ নালিশ আদিবাসীদের। ধৈর্য ধরে সব অভাব-অভিযোগ শুনলেন মুখ্যমন্ত্রী। নালিশ নিরসণে মিলল আশ্বাসও, তবে আদিবাসী সমাজের অভাব-অভিযোগের দায় কেন্দ্রের ঘাড়েই চাপালেন মমতা।
মঙ্গলবার বেলপাহাড়িতে শহিদ বীরসা মুণ্ডার জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাজ্য সরকার। সেই কর্মসূচি সেরে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী বেলপাহাড়ির একটি আদিবাসী গ্রামে ঢুকে পড়েন। মুখ্যমন্ত্রী ঢুকতেই তাঁকে দেখতে গোটা গ্রাম যেন ভেঙে পড়ার জোগাড়। স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে এদিনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মিশে যেতে দেখা গেল বাসিন্দাদের সঙ্গে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে একরত্তি এক শিশুকে কোলে তুলে আদরও করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে প্রথম নালিশ এক আদিবাসী রমণীর। 'ও দিদি ঘর পাই নাই, ঘর পাব কবে?' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে পেয়েই ক্ষোভের কথা মৃদু স্বরে উগরে দিলেন ওই মহিলা। উত্তরে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'এখন দিল্লি বন্ধ করে রেখেছে। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। আমারা কেন্দ্রকে জানিয়েছি। আমরা রোজ ঝগড়া করছি। আমরা এটা নিয়ে ফাইট করছি। যখন পাব দিয়ে দেব।' আরও এক বাসিন্দা জলের সমস্যার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। ২০২৪-এর শেষ পর্যন্ত জলের সমস্যা মিটে যাবে বলে তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- কলকাতার খুব কাছেই কোলাহলহীন অপরূপ এই সমুদ্রতট, ফাঁক পেলে ঘুরেই আসুন
এদিকে, জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রীকে ঈআদিবাসীদের এই জল-ঘরের নালিশকেই হাতিয়ার করেছে বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'জঙ্গলমহল চাকরি চায়। দ্রৌপদী মুর্মুর অপমানের প্রতিবাদে মন্ত্রিসভা থেকে অখিল গিরির বরখাস্ততা চায়। এসব না হলে জনজাতাতির মানুষ আরও রেগে যাবেন। আর কেন্দ্রতো টাকা বন্ধ করেছে ওনার চুরি রুখতে। জনতা তোলামূল কোম্পানির সঙ্গে নেই এটা প্রমাণ হয়ে গেল।'
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, 'গত ১২ বছর ধরে তো কেন্দ্র দিচ্ছে না বলতে পারবেন না। এখন তো মরার উপর খাঁড়ার ঘা। রাষ্ট্রপতিকে অপমান করেছেন ওনার মন্ত্রী। তাঁকে তো কিছু বললেন না। উল্টে বিধানসভার সময় মাসে ১০০০ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটাও এখন ওঁরা পান না। ফলে দেখেই সকলে রেগে যাচ্ছে। আর উনি কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন।'