নব মহাকরণের একাংশ কলকাতা হাইকোর্টকে ব্যবহারের জন্য দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কয়েকদিন আগে সেই ভবন হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্ট, বিচারব্যবস্থা এবং মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন মমতা। সেদিন অতিথি আসনে বসেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যিনি এই মুহূর্তে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক রায়ের জন্য শিরোনামে। সেদিন মমতা এবং বিচারপতির মধ্যেও কথা হয়েছিল। কী কথা হয় তা হাইকোর্টের এজলাসেই ফাঁস করলেন বিচারপতি গাঙ্গুলি।
মঙ্গলবার আদালতে বিচারপতি বলেন, "আমার সঙ্গে সেদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা হয়েছে। আমি বলি, ম্যাডাম আমি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। এ কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী আমার দিকে তাকান। তার পর বলেন, আপনি এত করছেন। এখন কিছু বলার নেই। যা শুনে আমি বলি, আমারও কিছু বলার নেই। এ কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি আপনার মতো কাজ করে যান।" বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সেদিনের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত গোপন কথোপকথন ভরা এজলাসে ফাঁস করেছেন।
“আমার বিরুদ্ধে খবর করুন, কোনও সমস্যা নেই। আমার আপত্তি নেই, কিন্তু মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না। এত বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি থাকছে না। বদনাম হচ্ছে বাংলার সরকারের।” গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টকে নব মহাকরণের দফতর হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে এসে প্রধান বিচারপতি-সহ সমস্ত বিচারপতি এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন আমিও আইনজীবী, যেকোনও দিন আদালতে কেসের জন্য আসতে পারি: মমতা
মঞ্চে তখন বসে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব, সহ বরিষ্ঠ বিচারপতি, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকরা। অতিথি আসনে আরও অনেক বিচারপতিদের মধ্যে বসে তখন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যাঁর একের পর এক নির্দেশে রাজ্য সরকারের মুখ পুড়েছে।
মমতা সেদিন বলেন, “দয়া করে মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না। স্যর, এটা মাঝে মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ায়, ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এটাই বিচারব্যবস্থা যা আগে প্রমাণের উপর করে মামলা নেয়। তেমনই সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের কাছেও আমার আবেদন, দয়া করে মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না। আমার বিনীত অনুরোধ। ভুল খবরে সম্মানহানি হয়। সত্যি খবর করুন। আমার বিরুদ্ধে খবর করুন, কোনও সমস্যা নেই। আমার আপত্তি নেই, কিন্তু মিডিয়া ট্রায়াল করবেন না।” রাজনৈতিক মহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা বিচারপতি গাঙ্গুলির উদ্দেশেই নাকি ছিল।