উত্তর ২৪ পরগনা সফরের শুরুতেই বৃহস্পতিবার চাকলায় লোকনাথ ব্রহ্মচারীর মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। সংস্কারের পর এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই নতুন করে এই মন্দিরের উদ্বোধন হয়। চাকলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেন তিনি। এরপর মুখ্যমন্ত্রী দেগঙ্গায় জেলায় তৃণমূলের কর্মীসভা করেন। এই সভায় বক্তৃতার সময়ও মমতার মুখে সম্প্রীতি ও জেলার গত একযুগে উন্নয়নের খতিয়ার শোনা যায়।
চাকলা গোটা দেশের কাছে এখন অন্যতম সেরা গন্তব্য বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'রক্ত আমাদের জীবন বাঁচায়। রক্তে কোনও ধর্মের নামের উল্লেখ থাকে না। ধর্ম মানবতার নাম, ভালবাসার নাম। ধর্ম মানে ভাগাভাগি নয়। ভোটের সময় ধর্ম নিয়ে কথা বলব, আর সারা বছর শোষণ করব, এটা তো হতে পারে না।' তাঁর আরও দাবি, 'লোকনাথ যুগপুরুষ। তিনি ভেদাভেদ মানতেন না। তিনি হিন্দু-মুসলমান মানতেন না। এটা মানবতার ধর্ম। আমাদের পবিত্র কর্তব্য সেটা রক্ষা করা।'
এরপর দেগঙ্গার কর্মীসভাতেও বিজেপিকে কটাক্ষ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, 'তৃণমূল মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করে না। সকলকে ভালোবাসে। আমার কাছে সব মানুষ প্রিয়। সকলকে নিয়ে ঘর করতে ভালোবাসি। এই ধর্মই আমার শিক্ষা। আজ লোকনাথ ধামে এসেছি। এটাই ছিল তাঁর ধর্ম। মানবতার ধর্ম। তিনি হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ করতেন না। তিনি একসময় মক্কা মদিনাতেও গিয়েছিলেন। এঁরাই প্রাণের ঠাকুর।'
লোকসভা ভোটের আগে উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চরমে পৌঁছেছে। সম্প্রতি ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বনাম জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের দ্বন্দ্বে অস্বস্তি বাড়ছে শাসক শিবিরের। যা নিয়ে এ দিন বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এ ধরণের কোন্দল বরদাস্ত নয় বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। বলেন, 'কেউ যদি ভাবে লোকালি বড় নেতা হয়ে গেছি, পার্টিটাকে না ভালবেসে নিজেকে ভালবাসব. তাহল সেটা তৃণমূলে হবে না। তৃণমূল মানে নিজেকে সেবা নয়, মানুষের সেবা করা। আমি বড়, তাই আর একজনকে পাত্তা দিলাম না, এটা সংগঠকের কাজ না। মানুষের সঙ্গে যে যত মিশবে, মানুষের আনন্দে দুঃখে যে ৩৬৫ দিন পাশে থাকবে, মানুষ তাঁকেই মনে রাখে।'
আরও পড়ুন- মমতাকে চরম হুঁশিয়ারি, সুপ্রিম ফয়সালার লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ শুভেন্দুর
পুরনো ও নতুনের মিশেলেই দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, 'যদি কেউ দুঃখ করে ঘরে বসে থাকেন, তাহলে তাঁকে ডেকে আনুন। আমি কোনও ঝগড়া বরদাস্ত করব না। আমাকে ৩৬৫ দিন কাজ করতে হয়।'