এবার জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে বরাদ্দ খালাসের আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকার স্বাস্থ্য খাতে রাজ্যের বরাদ্দ অর্থ আটকে দিয়েছে। সেই বঞ্চনার অভিযোগে তৃণমূলের মন্ত্রী-বিধায়করা যখন বিধানসভা চত্বরে ধরনায়, সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রীকে। হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারে কেন নির্দিষ্ট রং করা হয়নি, সেই কারণ দেখিয়েই আটকে দেওয়া হয়েছে প্রকল্পের অর্থ। পালটা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট রং করতে গেলে পরিকাঠামোগত খরচ বাড়বে। কারণ জানানোর পাশাপাশি, দুই পাতার চিঠিতে বরাদ্দ অর্থ রিলিজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা ১১ হাজার। তাতে প্রতিদিন তিন লক্ষ রাজ্যবাসী এবং রাজ্যের বাইরের বাসিন্দা চিকিৎসা পরিষেবা পান। সেই কারণে, কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ টাকা আটকে রাখলে রাজ্যবাসী সমস্যায় পড়বেন। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'আপনি জানেন যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার সমাজের দরিদ্র এবং প্রান্তিক অংশের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে জনগণের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। আমাদের প্রচেষ্টায় আমরা বিনামূল্যে সকলকে সাশ্রয়ী, সহজলভ্য এবং মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি।'
পাশাপাশি, মুখ্যন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, 'গত ১২ বছরে স্বাস্থ্যসেবার জন্য আমাদের বাজেটে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্যমূলক উদ্যোগ যেমন সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল নির্মাণ, স্বাস্থ্যসাথী, শিশুসাথী, মাতৃমা, চোখের আলো ইত্যাদি সফলভাবে চালু হয়েছে। গত কয়েক বছরে এসবের জেরে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপকৃত হয়েছেন।'
সেসব চিন্তা না-করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় গেরুয়া রং না-করানোয় কেন্দ্র অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বরাদ্দ টাকা আটকে দিয়েছে। চিঠিতে এমনই অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, জাতীয় স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে মোট ৮২৮ কোটি টাকার তহবিল আটকে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর নাম আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির করতে। বদলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর নাম করেছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর রং করা হয়েছে নীল-সাদা।
আরও পড়ুন- বিজেপি করার সাজা! বেতন বন্ধ বগটুইয়ের স্বজনহারা মিহিলালের
রাজ্যের বরাদ্দ অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রাখায় তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই তিন দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছে। প্রতিবাদ জানাতে আয়োজিত মন্ত্রী-বিধায়কদের ধরনায় মুখ্যমন্ত্রী নিজে অংশ নিয়েছেন। সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বরাদ্দ টাকা আদায়ের দাবিতে দিল্লি যাবেন। সেখানে আন্দোলনে অংশ নেবেন।