অপেক্ষার আর মাত্র কিছুদিন। জগন্নাথ দেবের 'আশীর্বাদ' এবার মিলবে বাংলার সমুদ্রনগরী দিঘাতেই। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে দিঘায় দুরন্ত গতিতে এগোচ্ছে মন্দির তৈরির কাজ। মঙ্গলবার দিঘা সফরে গিয়ে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুকে তিনি এদিন লিখেছেন, 'আজ, আমি আসন্ন জগন্নাথ মন্দির প্রকল্পের সাইট পরিদর্শন করেছি। প্রকল্পটি একটি দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে দেখে আমার হৃদয় আনন্দে ভরে যায়। আমি পশ্চিমবঙ্গ HIDCO-কে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই তাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং উত্সর্গের জন্য এই প্রকল্পটিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য।'
এরাজ্যের মুকুটে জুড়তে চলেছে নয়া পালক। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় জগন্নাথ ধাম তৈরি করছে হিডকো। দিঘায় এবার ধর্মীয় পর্যটনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠতে চলেছে এই জগন্নাথ মন্দির। ২০২২-এর মে মাসে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সফরেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের আদলেই দিঘায় তৈরি হবে জগন্নাথ ধাম।
সেই মতো কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল দ্রুত। আগামিদিনে দিঘার পর্যটনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে এই জগন্নাথ মন্দির। এর উচ্চতাও হচ্ছে পুরীর মন্দিরেরই প্রায় সমান। হিডকোর তদারকিতে দুর্বার গতিতে এগোচ্ছে মন্দির তৈরি কাজও। রাজস্থানের বংশী পাহাড়পুরের বেলেপাথর দিয়ে প্রায় ২০ একর জায়গার উপর তৈরি হচ্ছে সুবিশাল এই মন্দির।
মঙ্গলবারই দিঘা সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দিঘায় গিয়ে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজ দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'বিরাট একটা কর্মযজ্ঞ চলছে। হাজার হাজার বছর ধরে জগন্নাথের এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত থাকবে।' পরে ফেসবুকেও তাঁর মন্দির তৈরির কাজ পরিদর্শনের কয়েকটি ছবি তিনি পোস্ট করেছেন। ফেসবুকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'টি গ্র্যান্ড প্রকল্পটি মোট ২০ একর জমির উপর নির্মিত পুরীর ভগবান জগন্নাথ মন্দিরের প্রতিরূপ হতে চলেছে। মন্দিরটিতে একটি বিশাল প্রবেশদ্বার, প্রসাদের প্রস্তুতির জন্য একটি নিবেদিত "ভোগ-ঘর" এবং উপাসনার জন্য একটি বসার জায়গা থাকবে। দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা বিশেষ পাথর দিয়ে এটি নির্মাণ করা হবে এবং ভেতরে মার্বেল মূর্তি স্থাপন করা হবে। সবচেয়ে বড় কথা, নির্মাণ এমন হবে যাতে কোনো ঘূর্ণিঝড় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এতে প্রভাব ফেলতে না পারে।'
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর তীব্র নিন্দা, ‘রাজ্যপাল পদ রাজনীতির ঊর্ধ্বে’- বিতর্কের মুখে সাফ দাবি আনন্দ বোসের
মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন এটি শুধুই ধর্মীয় একটি স্থান হিসেবেই বিবেচিত হবে না। দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠবে দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির। ফেসবুকে তিনি আরও লিখেছেন, 'এই জগন্নাথ মন্দিরটি কেবল একটি ধর্মীয় কাঠামো নয়, আমাদের দেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ঐতিহ্যের মূর্ত প্রতীক হবে। এটি পর্যটনকে উত্সাহিত করবে এবং সারা বিশ্ব থেকে দর্শকদের আকর্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার ফলে এই অঞ্চলের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। এই মন্দির সকল স্তরের লোকেদের একত্রিত হতে এবং আমাদের ভাগ করা বিশ্বাস উদযাপন করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে।'