প্রেমিকের ব্ল্যাকমেল ও হুমকির জেরে শেষমেশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন এক কলেজ ছাত্রী। ঘটনার পরই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত যুবক। অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের তরুণীর পরিবারের। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা ওই তরুণী। ছাত্রীটির বাবা জানিয়েছেন, বছর খানেক ধরেই তাঁর মেয়ের সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই যুবক কোনওভাবে তাঁর মেয়ের সঙ্গে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কোনও ছবি তার মোবাইলবন্দি করে ফেলে। ছেলেটির এর আগেও একাধিক সম্পর্ক ছিল। কোনওভাবে তাঁর মেয়ে সব কিছু জেনে ফেলে। বিষয়টি নিয়ে ওদের মধ্যে ঝামেলা হয়। পরে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখিয়েই অনবরত তাঁর মেয়েকে ব্ল্যাকমেল করতে থাকে ওই যুবক, এমনই অভিযোগ মেয়েটির বাবার।
ওই ব্যক্তি আরও জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে ওই যুবকের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক চ্ছিন্ন করে ফেলার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেছিলেন। তবে তা জানতে পেরে অভিযুক্ত যুবক পিস্তল নিয়ে এসে তাঁর মেয়েকে শাসানি দেয় বলে অভিযোগ ছাত্রীর বাবার। প্রায়শই অভিযুক্ত যুবক তাঁদের বাড়িতে পিস্তল নিয়ে এসে মেয়েকে শাসানি দিত বলে দাবি ওই ব্যক্তির।
আরও পড়ুন- শহর থেকে জেলা, দাপট কুয়াশার, বৃষ্টি নিয়ে কী আপডেট হাওয়া অফিসের?
অন্যদিকে, ছাত্রীর মা বলেন, ''মেয়েকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল ওই যুবক। মেয়ে ওই যুবককে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। সেই কারমে ওই যুবক পিস্তল উঁচিয়ে আমাদের বাড়ির সবাইকে প্রাণে মারারও হুমকি দিয়েছিল।'' এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বেশ কিছুদিন ধরে তরুণী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে দাবি তাঁর পরিজনেদের।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে তরুণীর বাবা-মা করোনার ভ্যাকসিন নিতে বাড়ির বাইরে বের হন। তখনই ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই কলেজছাত্রী। মেয়েটির বোন সেই সময় বাড়িতেই ছিল। দিদিকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে দেখেই অন্যদের খবর দেয় সে।
পরে তরুণীকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকরা তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের বাবা-মা তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর জন্য ওই যুবককেই দায়ী করেছেন। ওই যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। কালনা থানার পুলিশ জানিয়েছে, আইনানুগ সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।