রঙিন মাছ চাষে দারুণ উৎসাহই শেষমেশ ঝুলিতে সাফল্য এনে দিয়েছে বৃদ্ধার। একটা সময় নেহাতই শখ করে রঙিন মাছের চাষ শুরু করেছিলেন ষাটোর্ধ্ব মনোরমা পানি। তবে অল্প সময়েই সেই শখ বদলে যায় পুরোদস্তুর পেশায়। বাড়িতেই রঙিন মাছ চাষের পর তা বিক্রির ব্যবসা খুলে ফেলেছেন মনোরমা দেবী। তাঁর এই প্রচেষ্টা দেখে এলাকার অন্যরাও উৎসাহ পাচ্ছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের আকোন্দবাড়ি গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মহিলা মনোরমা পানি। বাড়ির উঠোনে বিভিন্ন প্রজাতির রঙিন মাছের চাষ করেছেন তিনি। প্রথমটায় শখ করে মাছ চাষ শুরু করলেও এখন এই কাজ তাঁর প্রধান ব্যবসা হয়ে উঠেছে। পরিবারের আয়ের সংস্থান এনে দিচ্ছে এই রঙিন মাছের চাষ। বাড়ির সামনে চৌবাচ্চা ও পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির রঙিন মাছের চাষ করছেন তিনি। মাছের প্রজনন করিয়ে তা বিক্রির মাধ্যমে আর্থিক সংস্থানের পথ খুঁজে পেয়েছেন মনোরমাদেবী।
বয়সের ভারকে হেলায় উড়িয়ে দিন যত যাচ্ছে একাজে তত বেশি মনোনিবেশ করে চলেছেন মনোরমা পানি নামে এই মহিলা। তিনি জানান, বাড়ির সামনে চৌবাচ্চা তৈরি করে এই সব মাছের চাষ সম্ভব। বাড়ির মহিলারা এই কাজে নিযুক্ত হলে সংসার সামলানেরা পাশাপাশি বাড়তি আয়ও করতে পারবেন। এলাকার বিভিন্ন অ্যাকোরিয়ামের দোকানেও এই রঙিন মাছের ভালোই চাহিদা থাকে।
আরও পড়ুন- ফের গরু নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ, ‘কাউ হাগ ডে’ প্রত্যাহারে মন খারাপ?
সেই কারণে বাড়িতে মাছ চাষ করে সেই সব দোকানেও পরে তা সাপ্লাই দেওয়া যায়। এমনকী রঙিন মাছ বিদেশেও এখন রফতানি করা হচ্ছে বলে জানান মনোরমা দেবী। তিনি গোল্ড ফিস, ডিসকাস, অসকাস, রেড ক্যাপ, রেড আই, মিল্কি, বার্ব প্রভৃতি প্রজাতির রঙিন মাছ চাষ করেন। এই সব মাছ মশার লার্ভা খায়। এছাড়াও মাছের খাবার হিসেবে কেঁচো, ড্রাইফুট দেওয়া হয় ।
মনোরমা পানি বলেন, “আমার এমন কিছু করার ইচ্ছা ছিল যেখানে টাকা রোজগারের পাশাপাশি মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। রঙিন মাছের চাষ আমাকে আনন্দ ও অর্থ দুটোই দিচ্ছে। আমার তেমন কষ্টও হচ্ছে না। তাই বৃহৎ পরিসরে শুরু করার জন্য চেষ্টা করি। এব্যাপারে মৎস্য দফতরের সহযোগিতাও পেয়েছি।”
আরও পড়ুন- পাহাড়-পেরনো জেদেই প্রশ্নাতীত সাফল্য! টেটে প্রথম ইনার অদম্য লড়াই জানলে প্রেরণা পাবেন
এদিকে, নন্দীগ্রাম ১ নং ব্লকের মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু জানান, বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বাড়িতে শোভা বাড়াতে শৌখিন মানুষজন এই সব মাছ পালন করেন। এসব মাছের দাম একটু বেশি। তা ছাড়া এ মাছের চাষে অতিরিক্ত সময়ও দিতে হয় না। নির্ধারিত সময়ে খাবার ও একটু যত্ন নিলেই ব্যাপক লাভবান হতে পারেন চাষিরা। তাঁর কথায়, 'রঙিন মাছ চাষের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।' মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ই-লার্নিং-এর মাধ্যমে এই বিষয়ে অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা হয়েছে বলে জনা গিয়েছে।