ইডি-র হাতে ধৃত অসুস্থ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিকিৎসা ভার নিতে চাইছে না কম্যান্ড হাসপাতাল! মুখের কথা নয়, এই মর্মে রীতিমত ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শনিবার আবেদনও জানিয়েছিল সেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে কম্যান্ড হাসপাতালের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন বিচারতি। সূত্রের খবর, এবার বৃহত্তর আইনি লড়াইয়ের ভাবচিন্তা করছে সেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কেন চিকিৎসা সম্ভব নয়?
শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিচারকের নির্দেশ ছিল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে এবং তদন্তকারী আধিকারিক চাইলে বনমন্ত্রীকে কম্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করানো যেতে পারে।
সেই নির্দেশ বদলের আর্জি নিয়ে শনিবার আদালতের দ্বারস্থ হন কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, ওই সেনা হাসপাতালের উপর প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতে কর্মরত সেনা, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা হয় ওই হাসপাতালে। সেনা ও সেনা কর্মীদের পরিবারের সেবাই এই হাসপাতালের মূল উদ্দেশ্য। বাংলার মন্ত্রীর অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। শুধু এই কারণে হাসপাতালের চাপ বাড়িয়ে মন্ত্রীর চিকিৎসার দায় নেওয়া সম্ভব নয়। এতে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসাদের অসুবিধা হতে পারে, চিকিৎসায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।
আদালতের নির্দেশ?
কম্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক বলেন, 'এই চেয়ার থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেটা বদল করতে চাওয়া হচ্ছে কেন? আপনারা দেশকে সেবা করেন। হাসপাতাল তো মানুষের জন্যই। তাহলে ধৃত মন্ত্রীর সেবা করতে অসুবিধা কোথায়?' শেষপর্যন্ত ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিচারক সেনা হাসপাতালের আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যেতে পারেন।
এখন কেমন আছেন মন্ত্রী?
অ্যাপোলো হাতপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত মন্ত্রীর শীররিক অবস্থা স্থিতিশীল। শনিবার সকালে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দ্বিতীয় দফায় ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সব পরীক্ষার রিপোর্টই স্বাভাবিক। তাহলে হঠাৎ কেন পড়ে গেলেন মন্ত্রী? তার উত্তর পেতে মন্ত্রীকে ‘হেড আপ টিল্ট টেবিল টেস্ট’ পরীক্ষা করানোর কথা ভাবছেন চিকিৎসকরা। এই পরীক্ষা এক ঘণ্টা পাঁচ মিনিট ধরে চলে। বিভিন্ন অ্যাঙ্গলে রোগীকে দাঁড় করিয়ে, শুইয়ে এই পরীক্ষা করা হয়। কত ডিগ্রিতে কতক্ষণ রোগীকে দাঁড় করানো যায়, তার একটা নির্দিষ্ট সময় সীমা আছে। তবে যে অ্যাঙ্গলেই রোগীকে রাখা হোক না কেন, মাথা সবসময় সোজা থাকবে এই পরীক্ষা করার সময়। এই পরীক্ষার জন্যই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে আগামী সোমবার পর্যন্ত হাসপাতালে রাখতে আগ্রহী চিকিৎসকরা।