প্রতিবেশী বাংলাদেশে শারদীয়া উথসবের মাঝেই সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। যার আঁচ পড়েছে এপারেও। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার হুঁশিয়ারি, প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস সত্ত্বেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলায় উদ্বিগ্ন ভারত সরকার। সরব বিজেপি। একই সঙ্গে পুজোয় পশ্চিমবঙ্গেও হিন্দুরা বেশ কয়েকটি জায়গায় লাঞ্চিত বলে তোপ দেগেছেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরে পীরজাদা অব্বাস সিদ্দিকির মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তাপ বাড়ছে এ বাংলায়। সিদ্দিকির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতায় উস্কানির অভিযোগ তুলেছে মুখ্যমন্ত্রী বাংলা পক্ষ নামক সংগঠনটি। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর, কলকাতারপুলিশ কমিশনার ও রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে চিঠি দিয়েছে বাংলা পক্ষ। ভাইজানের মন্তব্যের সমালোচনায় মুখর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরঞ্জন চৌধুরীও।
উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য আব্বাস সিদ্দির বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে আর্জি জানিয়েছেন বাংলা পক্ষ। সংগঠনের শীর্ষ পারিষদ সদস্য কৌশিক মাইতির তরফে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ' সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়ো বার্তায় দেখা যাচ্ছে, মৌলবাদী রাজনীতিবিদ আব্বাস সিদ্দিকি তীব্র আক্রমণাত্মক সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রাখছেন। দুর্গাপূজোকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, আমাদের পশ্চিমবঙ্গ তা থেকে সুরক্ষিত আছে। এখানকার বাঙালি ধর্ম নির্বিশেষে নিজেদের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই রাজ্যে শান্তি বজায় আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিষয়কে টেনে এনে এই বাংলার মাটিকেও অশান্ত করার অপচেষ্টা হচ্ছে। বাঙালি বিরোধী বহিরাগত অপশক্তি যারা ধর্মের ভিত্তিতে বাঙালিকে ভাগ করতে চায়, তারা এইসব উস্কানির মদতদাতা। আপনার কাছে বিনীত আবেদন অবিলম্বে এঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অবলম্বন করুন। আব্বাসের মতো মৌলবাদীরা সখ্যাগুরু ধর্মীর মৌলবাদীদের ভিত মজবুত করে। পশ্চিম বাংলার অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদ বিরোধী চেতনা আপনার হাতে সুরক্ষিত থাকবে বলেই বিশ্বাস করি। এছাড়াও যে কোনও ধর্মের যে কেউ ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়ালে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। জয় বাংলা।'
আরও পড়ুন- ‘পশ্চিমবঙ্গও কি বাংলাদেশের পথেই?’, প্রশ্ন দিলীপ-শুভেন্দুর, রাজ্যে দুর্গামূর্তি ভাঙার অভিযোগ
একুশের ভোট বাংলায় তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করতে বামেরা কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফের সঙ্গে জোট বেঁধেছিল। তবে, কংগ্রেসের সঙ্গে পীরজাদার সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল শুরু থেকেই। সেই ফাটল আরও বাড়ল।
আরও পড়ুন- হাসিনার হুঁশিয়ারি-প্রশাসনের পদক্ষেপের পরও বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা, উদ্বেগ দিল্লির
আব্বাসের মন্তব্যের নিন্দা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। ভোট কম পেলেও কংগ্রেস সম্প্রীতির ভাবনাকে বিসর্জন দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি। এদিন ফেসবুকে অঘীর চৌধুরী লিখেছেন, 'বাংলার মানুষ কখনও সাম্প্রদায়িক মানসিকতাকে প্রশ্রয় দেয়নি, দেবেও না। কংগ্রেস চিরকাল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সংগ্রাম করেছে, আগামী দিনেও করবে। ভোট কম পেতে পারি বা বেশি পেতে পারি কিন্তু সম্প্রীতির ভাবনা কে বিসর্জন দিতে পারবো না। বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সকল রাজনৈতিক দল গুলোকে মেনে চলতে হবে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন