পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। সিঁথি থানায় রাজকুমার সাউয়ের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। অভিযোগের তির ছিল পুলিশের দিকে। রাজ্যে নানা সময়ে বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এবার পুলিশের গাফিলতি নিয়ে সোচ্চার হলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশের ভূমিকার জন্য অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায় সেকথা বৃহস্পতিবার জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুরের সৃজনী পেক্ষাগৃহে পশ্চিম বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, "পুলিশ ঠিকমতো কেস ডায়েরি তৈরি করতে পারে না বলে অনেক সময় অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়’’।
আরও পড়ুন: ‘পিকে মমতার মাসতুতো ভাই’, তীব্র কটাক্ষ দিলীপের
এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে দিল্লিতে গুলিকাণ্ডের ঘটনার পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে কেস লিপিবদ্ধ করা হয় না বলে তিনি মন্তব্য করেন। এই সময় উঠে আসে রাজ্য পুলিশের কর্মকান্ডের কথা। এ রাজ্যে সমস্ত কেস নথিভুক্ত করা হয় বলে তিনি দাবি করেন। অনেক সময় ভুল কেসও যে থানায় লিপিবদ্ধ করা হয়ে থাকে তাও তিনি জানান। তিনি বলেন, "ভেরিফাই না করেও কেস নথিভুক্তিকরণ হয়। সেক্ষেত্রে ভেরিফাই করে ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযোগটা ঠিক নয় ভুলও হতে পারে। তদন্ত করে দেখতে হবে। দেখলেন অভিযোগটা ঠিক নয়। তাতে প্রমাণ না পাওয়া গেলে এমনিতে বাদ হয়ে যাবে। পুলিশকে সিরিয়াসলি কাগজপত্র দেখতে হবে।"
এরপরই নিজের দফতরের কাজে ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী। মমতা বলেন, "অনেক সময় আপনারা কাগজপত্র দেখেন না, ঠিকমত সিডি তৈরি করেন না। সময়মত কেস ডায়রি তৈরি করতে হবে। কেস ডায়রি ঠিকমতো তৈরি করতে পারেন না বলেই অপরাধীরা অনেক সময় ছাড়া পেয়ে যান। কেস ডায়রি তৈরি করার মতো লোক তৈরি করতে হবে। যে আইনটা ভাল বোঝে তাঁকে দিয়ে লেখাতে হবে।"
আরও পড়ুন: ‘আরএসএস-বিজেপির চোখে চোখ রেখে বলা উচিত, তোমাদের রাজনীতি মানি না’
এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। এরপর তিনি সরকারি আইনজীবীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মমতা বলেন, "যাঁরা সরকারি আইনজীবী তাঁরা আইনজীবী হিসাবে কাজটা ভাল করে করুন। এরটাও নিলাম, ওরটাও নিলাম। দুটোর সাফাই গাইলাম। তা হয় না। সরকার যখন আইনজীবীদের টাকা দিচ্ছে তখন কোনও একটা পক্ষ নিতে হবে। সরকারের টাকাটা কিন্তু সস্তা নয়। এটা মাথায় রাখতে হবে।"
ধর্মান্তরকরণ নিয়েও এদিন সতর্ক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আদিবাসীদের ধর্মান্তরকরণের দিকে নজর রাখবেন। কোনও ধর্মান্তকরণ করতে দেব না।" পাশাপাশি পুরসভাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন, এনপিআর বা এনআরসি করা যাবে না। সিএএ চলবে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন