পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস ইস্যুতে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের সংঘাত তুঙ্গে উঠল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে গত ২০ জুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করেছিলেন। রাজভবনে পালিত সেই অনুষ্ঠানে এনসিসির সদস্যরাও উপস্থিত ছিল। পাশাপাশি, স্কুল পড়ুয়াদের জন্য বসে আঁকো প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছিল রাজভবনে। শুধু তাই নয়, রাজ্যপালকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
আর, এতেই ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। দু'মাস পরেও যার জের কাটেনি। রাজভবনের এইভাবে একতরফা পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন সংবিধান সম্মত নয় বলেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ইতিমধ্যেই ফোনে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি রাজভবনকে এই ইস্যুতে চিঠিও দিয়েছেন। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের বক্তব্য, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গভঙ্গ হয়েছিল। দেশের স্বাধীনতার আগেই ভাগ হয়ে গিয়েছিল বাংলা। যা পশ্চিমবঙ্গের যন্ত্রণাময় ইতিহাস।
দেশভাগের মাশুল সবচেয়ে বেশি গুণতে হয়েছে বাংলা এবং পঞ্জাবকে। কারণ, এই দুই রাজ্যই ভাগ হয়েছে। দেশভাগের যন্ত্রণা আজও কুড়ে খায় বহু মানুষকেই। সেই কারণে রাজ্যভাগের দিনটিতে আনন্দের আয়োজনের প্রশ্নই নেই, এমনটাই মনে করছে রাজ্য সরকার। আর, সেই কারণেই ২০ জুনের বদলে পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন- যাদবপুরে এনআইএ চেয়ে হাইকোর্টে শুভেন্দু, নাশকতার চেষ্টার অভিযোগ বিরোধী দলনেতার
এই মর্মে বিধানসভায় প্রস্তাবও আনা হতে পারে। ইতিমধ্যে, প্রতিষ্ঠা দিবস কবে হবে, তা স্থির করতে বিধানসভায় একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। যার উপদেষ্টা ইতিহাসবিদ সুগত বসু। সদস্য ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়রা। বিষয়টি নিয়ে কমিটির সদস্যরা বিধানসভার অধ্যক্ষের ঘরে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন নিয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। মঙ্গলবার থেকে ফের বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। অধিবেশনে এই বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব আনা হতে পারে।