Advertisment

মিজোরামে রেলব্রিজ ভেঙে মালদায় মৃত্যু-মিছিল! বাকযুদ্ধে জড়াল কংগ্রেস-তৃণমূল

নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ দুর্ঘটনায় মালদার মৃত ১৮ শ্রমিকের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে সাহায্য দেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
cong tmc criticise each other over death of workers due to bridge collapse in mizoram

মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করলেন মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।

মিজোরামে নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ দুর্ঘটনায় মালদার মৃত ১৮ শ্রমিকের পরিবারকে রাজ্যের তরফে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। নবান্ন একথা আগেই ঘোষণা করেছিল। বৃহস্পতিবার ফের একবার সেকথা জানিয়ে মৃতদের পরিবারকে আশ্বস্ত করলেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীরাও এদিন মালদার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। মিজোরামের দুর্ঘটনায় বাংলার শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

Advertisment

মিজোরামে ওই দুর্ঘটনায় মালদার ১৮ শ্রমিকের মৃত্যুর কথা জানানো হলেও, মৃতের সংখ্যা ২৩ বলেই দাবি একাংশের। এখনও পাঁচ জনের কোনও খবর পায়নি মিজোরাম প্রশাসন। তবে তাঁদেরও খোঁজ চলছে। বৃহস্পতিবার মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে মালদার চাঁচলের পুখুরিয়ার চৌদুয়ার গ্রামে যান রাজ্যের সেচ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, মিজোরামে দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে রতুয়া ২ ব্লকের চৌদুয়ার গ্রামের যুবকদেরই। এই গ্রামের ১৬ জন শ্রমিক মিজোরামে গিয়েছিলেন কাজ করতে। এছাড়াও ইংরেজবাজার থানার সাটটারি, বিনোদপুর এবং নরহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের আরও বাকি শ্রমিকেরাও মিজোরামে গিয়েছিলেন নির্মীয়মাণ ব্রিজে শ্রমিকের কাজ করতে। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মালদা থেকে প্রায় ২৮ জন শ্রমিক মিজোরামের আইজল থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে এই নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ তৈরির কাজে নিযুক্ত ছিলেন।

আরও পড়ুন- তৃণমূলে নরম রাহুল-অধীররা, বঙ্গে কংগ্রেসের দিশাহীন দশা! চটে লাল কৌস্তভ!

publive-image
ছবির বাঁদিকে মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ও ডানদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অধীর চৌধুরী।

বুধবার সকাল ১০টায় এই নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় মালদার ২৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি। এদিন মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মিজোরামের নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৮ জন শ্রমিকের মৃত্যুর কথা আমরা জানতে পেরেছি। পাঁচ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। মিজোরাম সরকারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। ইতিমধ্যে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়ার ঘোষণাও করা হয়েছে।' তাঁর কথায়, 'রেল ব্রিজ প্রকল্পে নিযুক্ত থাকা যে শ্রমিকদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের একজনেক চাকরি ও ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি করছি কেন্দ্রের কাছে।' শ্রমিক মৃত্যুতে রাজ্যকে কাঠগড়ায় তোলায় কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব সাবিনা ইয়াসমিন। 'শ্রমিক মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।' কংগ্রেসকে দুষে মন্তব্য রাজ্যের মন্ত্রীর।

আরও পড়ুন- বিরাট ধাক্কা মমতার, পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী তথা পুজোকর্তাকে CBI তলব

এদিন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামও গিয়েছিলেন মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে। তিনি এদিন বলেন, 'সব বিষয়টি তদারকি করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট দেব। আমরা চাই মালদার এত বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে কেন্দ্র সরকার অন্তত একটা করে রেলে চাকরি এবং আর্থিক ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা করুক।'

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে মিজোরামে নির্মীয়মাণ রেল ব্রিজ দুর্ঘটনায় মৃত মালদার শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এদিন দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে পুখুরিয়ার চৌদুয়ার গ্রাম থেকে শুরু করে ইংরেজবাজারের সাটটারি, নরহাট্টা গ্রামেও মৃতদের পরিবারের সঙ্গে গিয়ে দেখা করে এসেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। মিজোরামের এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যকেও বিঁধেছেন অধীর। তাঁর কথায়, "দেশের যে কোনও প্রান্তে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেই বাংলার শ্রমিকদের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে এই রাজ্যে কোনও কাজ নেই। অসহায় শ্রমিকেরা ছুটছেন ভিন রাজ্যে।'

Maldah West Bengal CONGRESS Mizoram tmc Death Bridge Collapse
Advertisment