Advertisment

Exclusive: 'ভোট লুঠে গণতন্ত্রের হত্যা', জানাতে প্রবীণ কংগ্রেস নেতার কীর্তি জোর চর্চায়!

শাসকদলের নেতারা অবশ্য প্রবীণ কংগ্রেস নেতার উদ্যোগকে পাগলের কাণ্ড বলে কচাক্ষ করেছেন।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
congress leader campaigning from village to village about vote looting in panchayats

'ভোট লুঠ' নিয়ে জনতাকে সজাগ করছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা।

কবিগুরুর, 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে', -গানের যেন প্রতিচ্ছবি দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানের কালনায়। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রভাত দাসের কর্মকাণ্ড দেখে এলাকার শাসক দলের নেতারা কটাক্ষ ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে চলেছেন। তবে 'কংগ্রেস বুড়ো' নামে খ্যাত প্রভাতবাবুর 'কুছ পরোয়া নেহি' অ্যাটিটিউড নজর কেড়েছে।

Advertisment

'ভোট লুঠ করে পঞ্চায়েতে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে'। একথাই জনতার কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব যেন একা কাঁধে তুলে নিয়েছেন ৭০ ঊর্ধ্ব কংগ্রেস নেতা প্রভাত দাস। ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে কট্টর এই কংগ্রেস নেতা 'ভোট লুঠ করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা'র কথা পোস্টার আকারে লিখে নিজের সাইকেলের সামনে লাগিয়েছেন। সেই সাইকেলে চেপেই তিনি এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রভাত বাবুর সাফ কথা, 'যতক্ষণ ধড়ে প্রাণ আছে এই কথা তিনি প্রচার করেই যাবেন।' এই ৭২ বছর বয়সে ভাঙা পায়ে সাইকেল চালিয়ে কালনা থেকে কার্শিয়াং প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পথ ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন- ‘নো ভোট টু মমতা বললেই সমস্যার সামাধান নয়’, পাল্টা শুভেন্দুকে জবাব নওশাদের

কংগ্রেস নেতা প্রভাত দাসের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কালনা ১ ব্লকের সিমলন গ্রামে। বর্তমানে তাঁর বয়স ৭২ ছুঁয়েছে। তাঁদের সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার। বিজ্ঞানে স্নাতক প্রভাত দাস। তাঁর বাবা তারাপদ দাস কংগ্রেস করতেন। প্রভাত দাস বলেন, 'বাবার হাত ধরে স্কুল জীবন থেকেই কংগ্রেস পার্টির মিটিং-মিছিলে যেতাম। সেই থেকেই কংগ্রেস পার্টির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা তৈরি হয়। সিপিএমের লোকজন মেরে আমার ডান পা ভেঙে দিয়েছিল। তবুও কংগ্রেস পার্টি ছাড়িনি। ৭২ বছর বয়সেও এখনও কংগ্রেসকেই আঁকড়ে ধরে আছি। আমৃত্যু তাই থাকব।'

তাঁর কথাতে উঠে এসেছে সাগরদিঘির বায়রন বিশ্বাসের নাম। তবে প্রভাতবাবু জানিয়েছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার কথা কল্পনাও করতে পারেন না তিনি। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে প্রভাত দাস কালনা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ১৯ নম্বর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। প্রভাতবাবুর অভিযোগ, 'শুধু ভোটের দিনেই নয়, গণনার দিনেও রাজ্যের অন্য জায়গার মতো কালনাতেও ভোট লুঠ হয়েছে। সেই লুঠের ভোটের শিকার তিনিও।'

আরও পড়ুন- ছদ্মবেশে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করে শোরগোল ফেলেছিলেন, সেই মহিলার ওপরই হামলা! গ্রেফতার তৃণমূল নেতা

তিনি আরও বলেন, 'ভোটের সময় আমাকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। শাসক দল ভোটের দিন ও গণনার দিন যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। শুধু কালনায় নয়, গোটা রাজ্যে তা হয়েছে।' তাঁর দাবি, 'আমাকেও জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। লুঠের পঞ্চায়েত ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তাই গণতন্ত্র বাঁচানোর লক্ষ্যে সাইকেলে চেপে ঘুরে জনতার কাছে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি।'

বর্ধমানের কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, “প্রভাত দাস শুধু একনিষ্ঠ কংগ্রেস কর্মীই নন, তিনি কংগ্রেস দলের সম্পদ। প্রভাতবাবু একাই একশো। সাইকেলে ঘুরে ঘুরে তিনি যা প্রচার করছেন সেটাই এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের বাস্তব চিত্র ছিল।'

আরও পড়ুন- গণনার পর সিপিএমের ব্যালট উদ্ধার, কোথাও পাঁচিলের পিছন, আবার কোথাও বনজঙ্গল থেকে, কীসের ইঙ্গিত?

যদিও প্রবীণ প্রভাত দাসের এই উদ্যোগকে 'পাগলের কাণ্ড' বলে কটাক্ষ করেছেন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শান্তি চাল। তিনি বলেন, 'ওঁর কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু দেখছি না। কালনাবাসী জানে তৃণমূল সরকারের রাজত্বে কালনার কতটা উন্নয়ন হয়েছে। কালনার কত মানুষ জনহিতকর প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। সেই কারণে কালনাবাসীর ভোটেই তৃণমূলের প্রার্থীদের জয় হয়েছে।'

tmc CONGRESS West Bengal Purba Bardhaman panchayat election 2023
Advertisment