নন্দীগ্রামে জাহাজ বাড়ি। জাহাজের আদলে তৈরি বাড়ি। ঠিক বাড়ি বললে ভুল হবে। এক কথায় বিশাল অট্টালিকা। জাহাজের ডেকে লেখা 'মাশাআল্লাহ'। তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের এই বাড়ি ঘিরেই একসময় প্রবল চর্চা হয়েছে। নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা সুফিয়ানের সেই বাড়ি দেখে প্রশ্ন তুলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সরব হয়েছিল বিরোধী দলগুলোও। বিতর্কের মধ্যেই সেই সময় শেখ সুফিয়ানই দাবি করেছিলেন ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ওই বাড়ি তৈরি করেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলাপরিষদের প্রাক্তন সহ-সভাধিপতি সুফিয়ানের বাড়ি ফের চর্চায়! কেন?
জানা গিয়েছে, শেখ সুফিয়ানের জাহাজ বাড়ির দখল নতে মরিয়া কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক।
বাড়ি তৈরির জন্য ২০১৪ সালে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন শেখ সুফিয়ান। তখন এই ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ছিলেন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ঋণের প্রেক্ষিতে নিয়মিত কিস্তি দিয়েছেন শেখ সুফিয়ান। কিন্তু তারপর থেকেই আর কিস্তির টাকা শোধ করছেন না তিনি। গত ২০ মাস তিনি কোনও কিস্তি দেননি। ফলে ওই ঋণের এখনও সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে।
এছাড়া ট্রলার কেনার জন্য কন্টাই ব্যাঙ্ক থেকেই ২০২০ সালে ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন শেখ সুফিয়ান। সেই টাকাও শোধ হয়নি। ফলে বর্তমানে আসল ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার পাশাপাশি সুদ জমেছে আরও ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কাছে সুফিয়ানের বকেয়ার অঙ্ক প্রায় ৪৯ লক্ষ টাকা।
অভিযোগ, ঋণের টাকা একাধিকবার শোধ করার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাতে কোনও সাড়া দেননি তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। ঋণ অনাদায়ে এখন সুফিয়ানের জাহাজ বাড়ি এনপিএ তথা নন পারফর্মিং অ্যাসেট হয়ে গিয়েছে। তাই এবার আইনি পথেই জাহাজবাড়ি দখল নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে মরিয়া কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক। দিন কয়েক আগে ব্যাঙ্কে বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সভাতেই আইনি পথে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে ব্যাঙ্কের অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। অভিযোগ, কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে। ব্যাঙ্ক অতিরিক্ত দু'বছরের সুদ চাপিয়ে দিয়েছে। সেটা নিয়েই তাঁর আপত্তি রয়েছে।