বছরের তিরিশেক যুবকের দেহে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসতেই তোলপাড় জেলাজুড়ে। আক্রান্ত যুবককে মঙ্গলবার দুপুরে পাঠানো হল বেলেঘাটা আইডিতে। যুবকের বাবাকে মেদিনীপুর মেডিকেলে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আর পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার নিজামপুর গ্রামের সমস্ত অধিবাসীই এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. গিরীশচন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, "গত ২২ মার্চ মুম্বাই থেকে সোনার কারিগর ওই যুবক ট্রেনে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া স্টেশনে নেমেছিলেন। সেখান থেকে বাসে কিছুটা গিয়ে পরে মারুতি ভ্যানে নিজের বাড়ি পৌঁছান তিনি। বাড়িতে শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ করায় প্রথমে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে যায় ওই যুবক। সেখানে শরীরে সন্দেহজনক লক্ষণ দেখা দেওয়ায় ২৮ মার্চ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে আইসোলেশনে থাকার পর্বেই সোমবার রাতে করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে।"
করোনা ধরা পড়ার পর ওই আইসোলেশন কক্ষে থাকা সকলকেই বিশেষ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ওই যুবকের মুম্বাই থেকে বাড়ি পর্যন্ত যাওয়া ও ঘোরাফেরার পুরো চেনটিকে লিপিবদ্ধ করতে শুরু করেছে পুলিশ। বেলা একটা নাগাদ আক্রান্ত যুবককে বেলেঘাটা আইডিতে পাঠিয়ে তাঁর বাবাকে আইসোলেশন রাখা হয়। অন্যদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিজামপুর গ্রামের প্রবেশপথ সিল করা হয়। পুরো গ্রামে মাইকিং করে গ্রামবাসীদের বাড়ির মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। গ্রামে স্বাস্থ্য দপ্তরের মেডিকেল টিম ও পুলিশ ক্যাম্প বসেছে। ওই যুবকের পরিবারে থাকা বাকি চারজনকে গ্রামের পাশে সরবেড়িয়া বি সি রায় উচ্চ বিদ্যালয়ে স্পেশাল কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, "গ্রামের সকলকেই হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুলিশ কড়া নজরদারি রেখেছে। সমস্ত এলাকায় গ্রামপঞ্চায়েত স্তরে টাস্ক ফোর্স তৈরী করা হয়েছে ৷ জেলাজুড়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা সহ অন্যান্যদের জন্য হোম ডেলিভারি চালু করেছে পুলিশ। কারও কোনও কিছু প্রয়োজন হলে পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে বাড়িতে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলাতে মোট কুড়ি হাজারের বেশি মানুষ হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। ৩০০ শ্রমিক রয়েছেন বিভিন্ন সেন্টারে। জেলার ১৬টি স্থানে স্পেশাল নাকা রয়েছে। হোম ডেলিভারি বা এই পরিস্থিতিতে সহযোগিতা করতে স্বেচ্ছা উদ্যোগী কেউ থাকলে ৮০০১০০৭৮৬৯ নম্বরে রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হচ্ছে। এরপর যাকে যখন দরকার হবে ফোন করে ডেকে নেওয়া হবে।"