করোনার থাবা এবার জেলের অন্দরেও। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বন্দিদের প্যারোলে ছাড়াকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তপ্ত হল দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। জানা গিয়েছে, আদালতে শুনানির তারিখ ক্রমশ পরিবর্তন হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বন্দিরা। সূত্রের খবর, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার কারাগারের ভিতরে রক্ষীদের সঙ্গে ব্য়াপক সংঘর্ষ হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জেলের অন্দর। দফায় দফায় ইটবৃষ্টি চলে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সুপারিন্টেন্ডসহ অন্য় অফিসগুলোতে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্য়ু হয়েছে বলে জেল সূত্রে খবর। তবে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানা যাচ্ছে। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারেও বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছিল। সেখানেও পরিস্থিতি আয়ত্তে বলে জানা যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, বন্দিদের আটকাতে গুলি চালায় জেলের রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী। জখম হলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বন্দিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। অবস্থা খতিয়ে দেখতে সেখানে যান ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটও। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা যায়নি। অশান্ত জেলকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাটানো হয় টিয়ার গ্যাসের সেল।
এদিকে এই ঘটনায় আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন বিচারাধীন বন্দি ও পুলিশকর্মী। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই রাজ্য সরকারের তরফে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে থাকা যাবজ্জীবন বন্দিদের ১৫ দিনের জন্য় প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, করোনা আতঙ্কের মধ্যেই সেই তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে এমন খবর পেতেই ট্রায়ালে থাকা বন্দিরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তার ওপর আদালতে ক্রমশ মামলার তারিখ বদলাতে থাকায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে ওই বন্দিদের। প্রথম দফায় বন্দিরা জেলের ভিতরের গেট ভাঙে। তারপর মূল গেটের তালা ভাঙতে উদ্য়ত হয় বলে জানা গিয়েছে। এদিকে বন্দিরা যাতে মূল গেট পেরিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গুলি চালায় পুলিশ, এমনটাই সূত্রের খবর। শুরু হয় তুমুল ইটবৃষ্টি। কয়েকজন বন্দি আহত হওয়ায় সুপারিনটেন্ডেন্ট সহ অন্য় অফিসেও আগুন লাগিয়ে দেয় বলে জানা গিয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে আসে দমকল বাহিনী।
আরও পড়ুন: হ্যান্ড স্যানিটাইজার-মাস্কের দাম বেঁধে দিল মোদীর সরকার
খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। ঘটনাস্থলে পৌঁছন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দ্বিতীয় দফায় বিকেল পাঁচটা নাগাদ ফের উত্তপ্ত হয় সেন্ট্রাল জেল। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্য়াসের সেল ফাটায় পুলিশ। এখন করোনাভাইরাস নিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি রাজ্যে। এর মধ্যেই এমন ঘটনায় নতুন করে তৈরি হয়েছে অস্বস্তি।