পশ্চিমবঙ্গে প্রথম করোনা আক্রান্ত অর্থাৎ লন্ডন ফেরত অসুস্থ যুবকের বাবার সংস্পর্শে আসায় নদীয়া আট ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা হল। নদিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত কুমার দিয়ান জানিয়েছেন, "৮ জনকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে আইসোলোশনে রাখা হয়েছে। ওই চিকিৎসকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। এখন ওই চিকিৎসক বেলঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।"
১৫ মার্চ লন্ডন থেকে ফেরে করোনা আক্রান্ত অর্থাৎ ডাক্তারের পুত্র। জানা গিয়েছে, সেদিনই তিনি এয়ারপোর্টে গিয়েছিলেন ছেলেকে আনতে। এরপর বাড়িতেই ছিলেন। এরপর মঙ্গলবার নদীয়ার কৃষ্ণনগরে রোগী দেখতে যান ডাক্তার (আক্রান্তের বাবা)। সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরে তিনি ১৫ জনের কাছাকাছি রোগী দেখেছেন। এই খবর কৃষ্ণনগরে ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সতর্ক হয়ে যায় জেলা স্বাস্থ্য় দফতরও। এরপর ওই ব্যক্তিকে শক্তিনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বেলেঘাটা আই.ডি হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে জানা যাচ্ছে, আক্রান্তের ডাক্তার বাবা, আমলা মা এবং গাড়ির চালকের রক্তের নমুনা 'নেগেটিভ' এসেছে।
জানা গিয়েছে, গত ১৬ মার্চ ওই তরুণ এমআর বাঙুর হাসপাতালে যান। সেখানে ডেপুটি সুপারের সঙ্গে দেখা করেন ওই তরুণ। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি জানার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে বেলেঘাটা আইডি-তে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই তরুণ শোনেননি। দু’দুবার তাঁকে ওই হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই তরুণ তা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর গত ১৭ মার্চ তাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিন নবান্নে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”অবিবেচকের মতো কাজ করবেন না। বিদেশ থেকে ফিরলে টেস্ট করিয়ে নিন। বিদেশ থেকে ফিরে টেস্ট না করে শপিং মলে ঘুরে বেড়াবেন না, পার্টিতে যাবেন না। ব্যক্তিভেদে রোগ হয় না। রোগ সকলেরই হতে পারে। প্রভাবশালী বলে রোগ এড়াবেন না”। এর আগেও একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ”রোগ লুকোবেন না”।
এদিকে, আক্রান্ত তরুণের মা রাজ্য সরকারের পদস্থ আমলা হওয়ায় গত দু’দিনে যাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন, তাঁদের নজরে রাখা হচ্ছে। বুধবার রাজ্য সরকারের এক উচ্চপদস্থ আমলা ও তাঁর স্ত্রীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। আক্রান্ত তরুণের মা রাজ্যের পদস্থ আমলা হওয়ায় নবান্ন ও মহাকরণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বুধবার নবান্নে স্যানিটাইজেশন করা হয়।