Advertisment

করোনায় সুরক্ষার দাবিতে হাওড়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন নার্সরা

করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন আশঙ্কা দেখা গেলে সেই রোগীদের সরাসরি আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তির দাবিও তুললেন সরকারি হাসপাতালের নার্সরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
coronavirus, করোনা, করোনা আতঙ্ক

ছবি: অরিন্দম বসু।

তিন সপ্তাহের লকডাউনের প্রথম সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই হাওড়া জেলা হাসপাতালে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা । সোমবার হাওড়া জেলা হাসপাতাল, উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল এবং উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নার্সরা বিক্ষোভে শামিল হন। তাঁদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে কাজ করার জন্য অবিলম্বে তাঁদের সুরক্ষার জন্য সব ব্যবস্থা নিতে হবে। নার্সদের অভিযোগ, তাঁদের পিপিই তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ অ্য়াপ্রন পরেই কাজ করতে হচ্ছে। এন ৯৫মাস্কের সংখ্যা অপ্রতুল তাই, সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক পরেই রোগীর কাছে যেতে হচ্ছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারও পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই বলে দাবি তাঁদের।

Advertisment

করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন আশঙ্কা দেখা গেলে সেই রোগীদের সরাসরি আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তির দাবিও তুললেন সরকারি হাসপাতালের নার্সরা। তাঁদের আশঙ্কা, এমন রোগীদের অন্যান্যদের সঙ্গে জেনারেল ওয়ার্ডে প্রথমে ভর্তি করলে সেক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে সোমবার নার্সরা হাওড়া জেলা হাসপাতাল সুপারের সঙ্গেও দেখা করেন।

আরও পড়ুন: করোনায় ‘রেইনকোট দিচ্ছে সরকার’, ক্ষোভে ফুঁসছে কলকাতার ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীরা

জেলা হাসপাতালের এক স্টাফ নার্স বলেন, "আমাদের হাসপাতালে যে রোগী ইমারজেন্সিতে আসছেন সেই রোগীদের কোনও অ্যাসেসমেন্ট করা হচ্ছে না। উপরন্তু তাঁদের জেনারেল ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে যদি কোনও করোনা আক্রান্ত রোগী থাকেন বা তাঁর যদি করোনা উপসর্গ থাকে সেক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়বে। কারণ তার রিপোর্ট আসতে তিনদিন লাগবে। যতক্ষণ না করোনা পজিটিভ হচ্ছে ততক্ষণ রোগীকে আইসোলেশনে পাঠানো হচ্ছে না। এই তিনদিনে ওই রোগীর থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকবে। আমরাও সেখান থেকে সংক্রমিত হতে পারি। এটাই সমস্যা। আমরা চিকিৎসকদের প্রতিদিন বলছি, যে রোগীকে আপনারা সন্দেহ করছেন সেই রোগীকে সরাসরি আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করুন। কেন তাঁকে জেনারেল ওয়ার্ডে রাখা হবে। এই তিনদিনে সংক্রমণ আমাদের মধ্যেও ছড়াতে পারে। আমরা কোনও প্রোটেকশন সেখানে পাব না। এই নিয়ে হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে দেখা করেছি। আমরা এতে আতঙ্কিত বোধ করছি''।

এ বিষয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার ডা. নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ''করোনায় রোগী ভর্তি নিয়ে আমরা সরকারি নির্দেশিা মেনেই কাজ করছি। নার্সরা আজকে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। কিছু বিষয় জানিয়েছেন। ওঁদের প্রস্তাব আমরা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়ে দেব''।

আরও পড়ুন: ৫ নয় ১০ লাখের বিমা, চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নয়া ঘোষণা মমতার

উলুবেড়িয়ার দু’টি হাসপাতালেই আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই দুটি হাসপাতালের নার্স এসব দাবিতে কয়েকদিন আগেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কাজে আসা-যাওয়ার জন্য যানবাহনের ব্যবস্থার দাবিও তাঁরা প্রশাসনের কাছে রেখেছিলেন। সেই সময়ে কর্তারা আশ্বাস দেওয়ার পর দিন তিনেক কেটে গেলেও পরিস্থিতির বদল হয়নি। তাই এদিন ফের তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। করোনা নিয়ে এই উদ্বেগের মধ্যে খোদ নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এই অসন্তোষে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সব মহলে।

উল্লেখ্য়, স্বাস্থ্য়কর্মীদের রেনকোট দেওয়া হচ্ছে, এমনই অভিযোগ করছেন এ রাজ্যের বেশ কিছু সরকারি চিকিৎসক। তাঁদের আরও অভিযোগ, “এই রেইনকোটে ভাইরাস আটকাবে না। স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না পরেন সেদিকে সঠিকভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে না”।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus
Advertisment