Advertisment

লকডাউন বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৫, চিকিৎসার জন্য শহরে আসছে আরও ২০

আক্রান্ত ৫ জন একই পরিবারের সদস্য। আক্রান্তদের মধ্যে ৯ মাসের শিশু কন্যা-সহ একজন ৬ বছরের শিশু ও ১১ বছরের কিশোরও রয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

স্তব্ধ কলকাতা। ছবি- পার্থ পাল

রাজ্যে এক ধাক্কায় বাড়ল আক্রান্তের সংখ্যা। এবার করোনার সংক্রমণ মিলল ৯ মাসের শিশু-সহ মোট ৫ জনের শরীরে। জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি বিদেশ ফেরৎ একজনের সংস্পর্শে আসে ওই ৫ জন। আক্রান্ত ৫ জন একই পরিবারের সদস্য। আক্রান্তদের মধ্যে ৯ মাসের শিশু কন্যা-সহ একজন ৬ বছরের শিশু ও ১১ বছরের কিশোরও রয়েছে। নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা এই পরিবার। গত ১৬ মার্চ দিল্লিতে একটি নিমন্ত্রণে যায় ওই পরিবার। ইংল্যান্ড ফেরত এক আত্মীয়ও উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। ১৭ মার্চ ওই প্রবাসী যুবক অসুস্থ বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। তার রিপোর্টও পজেটিভ আসে। আগামিকাল সবমিলিয়ে মোট ২০জনকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে।

Advertisment

করোনাভাইরাস কতটা মারাত্মক হতে পারে, সেই আন্দাজ পেয়েই নেওয়া হয়েছিল সবরকম ব্যবস্থা। তবু এখনও ঠেকানো যাচ্ছে না মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ। পশ্চিমবঙ্গে আরও পাঁচজন করোনা আক্রান্ত হলেন শুক্রবার। একদিনে একটিই সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এ রাজ্যে। এর আগে বৃহস্পতিবার নয়াবাদের এক বৃদ্ধের শরীরে পাওয়া গিয়েছিল নভেল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি। পশ্চিমবঙ্গে এখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫। স্বাস্থ্য দফতরের খবর অনুযায়ী, হাসপাতালে আইসোলেশনে আছেন ৩৮৫ জন।

এদিকে ৬৬ বছর বয়সী নয়াবাদের বাসিন্দা এই বৃদ্ধকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একরাশ প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুরের এগরাতে এক বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরেই জ্বর ও শ্বাসকষ্টে কাবু হন বৃদ্ধ। মঙ্গলবার ২৩ মার্চ তিনি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তাঁর লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট আসে পজিটিভ। বর্তমানে ওই বৃদ্ধের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ভর্তি কোয়ারান্টাইনে। বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর, করোনা আক্রান্ত নয়াবাদের বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থা আপাতত সঙ্কটজনক। ভেন্টিলেশনে রেখে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

আরও পড়ুন: বাবা আর নেই, জানতেই লকডাউনে কলকাতা আসার ছাড়পত্র ছেলেকে

এদিকে করোনার মতো বায়ুবাহিত রোগের ছড়িয়ে পড়া আটকাতে দেশ এবং রাজ্যজুড়ে চলছে লকডাউন। তবে যাতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে বঞ্চিত না হয় মানুষ সেই দিকে কঠোর দৃষ্টি রেখেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকালে পোস্তা বাজারে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, "“দোকান খোলা না থাকলে মানুষ খাবে কী? আমি যা বলছি, শোনো। পোস্তা খোলা রাখ। আমি যখন বলছি খোলা রাখ, তখন কথা শোন। পোস্তাবাজার খোলা না রাখলে লোকে কি করে (দরকারি জিনিস) পাবে?”

করোন আবহে খাদ্যসামগ্রীর সংকট এড়াতে বাজার পরিদর্শনও সাড়েন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ মতো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করার জন্য রাজ্যবাসীকে অনুরোধও জানান তিনি। এমনকী খড়ি নিয়ে নিজ হাতে রাস্তায় দাগ কেটে দূরত্ব বজায় রেখে কেনা-কাটা করার পাঠ দেন মমতা। জানবাজারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সবজির দোকানের সামনে ইট দিয়ে বৃত্তাকার দাগ কাটেন। গোল দাগ কেটে দেখিয়ে দেন কীভাবে দাঁড়াতে হবে। যে গোল দাগটা সঠিক দূরত্বে হয়নি তা নিজেই কেটে দেন।

আরও পড়ুন: রাজ্যে রাজ্যে আটকে শ্রমিক-পর্যটক, ভরসা মমতাই

এদিকে করোনা পরিস্থিতির জেরে বাংলায় মসজিদ বন্ধ করা হচ্ছে। আপাতত মসজিদে না আসার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে মুসলিম সংগঠনগুলির তরফে। রাজ্যের সমস্ত মসজিদ বন্ধ করতে ইমামদের নির্দেশ দিয়েছে বেঙ্গল ইমামস অ্যাসোসিয়েশন। করোনা আবহে সাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে কলকাতার নাখোদা মসজিদও। এই মুহুর্তে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৭২৪। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব অনুসারে, মৃতের সংখ্যা ১৭। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬৬ জন।

West Bengal coronavirus
Advertisment