Advertisment

করোনায় 'রেইনকোট দিচ্ছে সরকার', ক্ষোভে ফুঁসছে কলকাতার ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীরা

প্রতি মুহূর্তেই করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে যাচ্ছেন তাঁরা। অথচ তাঁরাই নিজেদের অসুরক্ষিত মনে করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

"হাজমাত স্যুট দিচ্ছে না। তার বদলে রেইনকোট দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য়কর্মীদের"। এমনই অভিযোগ করছেন এ রাজ্যের বেশ কিছু সরকারি চিকিৎসক। তাঁদের আরও অভিযোগ, "এই রেইনকোটে ভাইরাস আটকাবে না। স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না পরেন সেদিকে সঠিকভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে না"।  করোনার সঙ্গে এই যুদ্ধে একেবারে প্রথমের সারিতে রয়েছেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাই তাঁদের সংক্রমণের ভয় সর্বক্ষণ এবং সবচেয়ে বেশি। প্রতি মুহূর্তেই করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে যাচ্ছেন তাঁরা। অথচ তাঁরাই নিজেদের অসুরক্ষিত মনে করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ।

Advertisment

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ডাঃ অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "ইন্টার্নদেরও সম্প্রতি কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথমদিকে মাস্ক নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তিন স্তরের সাধারণ সার্জিকাল মাস্ক পরেই তাঁরা কাজ করছিলেন। এতে ভাইরাস আটকায় না। এরপরই ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেক্ট ইকিউপমেন্ট) দেওয়ার কথা হয়। সেটি যখন এসে পৌঁছায় দেখা যায়, সেখানে রয়েছে সাধারণ রেইনকোট, মাস্ক এবং হাত-পায়ের গ্লাভস। অথচ যে পোশাক পরে আসলে কাজ করা হয়, সেটি হল হাজমাত স্যুট। তা দেওয়া হয়নি। এর ফলে শরীরের বেশ কিছু অংশ ঢাকা থাকছে না। ফলে সহজেই শরীরের সেইসব অংশ ভাইরাসের সংস্পর্শে আসছে"।

publive-image এমনই কিছু পোশাক দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ডাক্তারদের

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য আরেক চিকিৎসক জানিয়েছেন, "নিয়ম অনুযায়ী, পিপিই একটি বদ্ধ ঘরে পরতে হবে। কাজ শেষ হয়ে গেলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সতর্কভাবে তা খুলে রাখতে হবে। এই নিয়ম সঠিকভাবে বেলেঘাটা আইডিতে পালন করা হচ্ছে না"।  তিনি আরও বলেন, "কাজ শেষে ডাক্তার, নার্স ও জুনিয়র ডাক্তারদের বাড়ি বা হোস্টেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কাজ একেবারেই উচিত নয় বলে আমি মনে করছি"।

হাসপাতাল কর্তপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন? ডাঃ অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য বলেন, "বৃহস্পতিবার বেলেঘাটা আইডি-র বেশ কিছু জুনিয়র ডাক্তার সুপারের কাছে গিয়েছিলেন, সেখানে সমস্যার কথা জানান হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করতে চায়নি। আমরা মেডিক্যাল কলেজের কর্তপক্ষকে জানালে, তিনি বলেছেন, এর মধ্যেই মানিয়ে গুছিয়ে কাজ করতে হবে। এর থেকে বেশি কিছু এই মুহূর্তে করা সম্ভব নয়"। প্রসঙ্গত, আগামী সপ্তাহ থেকে মেডিক্যাল কলেজে করোনা আক্রান্ত রোগীদের রাখা হবে। পাঁচ নম্বর গেটের পাশে নতুন হেস্টেল বিল্ডিং-কে কোরেন্টইন করা হবে।

publive-image এমনই কিছু পোশাক দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ডাক্তারদের

তৃণমূলের চিকিৎসক বিধায়ক তথা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজি এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, "এটি ভুল তথ্য। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য দফতর সমস্ত রকম পদক্ষেপ করছে। যাঁরা এই অভিযোগ করেছেন, তাঁরা মমতা সরকারের বিরোধিতা করতে চায়। সুরক্ষার জন্য সমস্ত রকমের বন্দোবস্ত করা হয়েছে"।

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা আই.এম.এ-র সভাপতি ডাঃ শান্তনু সেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "এখনও অবধি এমন সংবাদ আমি শুনিনি। তাই এই সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না"।

আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে জারি পূর্ব নিষেধাজ্ঞা

মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, "সরকারকে আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি, যাতে এই স্যুটটি আরও ভালো কোয়ালিটির পাঠানো হয়। শনিবার থেকে মেডিক্যাল কলেজে আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্ত সরকার নেবে"।

উল্লেখ্য, প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক না মেলার অভিযোগে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় যুক্ত নার্সরা বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন বুধবার। এদিন দুপুরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে বেশ কিছু নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সুপারের কাছে বিক্ষোভও দেখায়। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, তাঁদের সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষা করা হচ্ছে।

coronavirus corona
Advertisment