Purba Bardhaman News:খুনের চেষ্টার মামলা, তৃণমূলের তাবড় নেতা-নেত্রীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আদালতের

Purba Bardhaman News: শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের আদালতের এই নির্দেশ ঘিরে জেলা রাজনীতিতে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে

Purba Bardhaman News: শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের আদালতের এই নির্দেশ ঘিরে জেলা রাজনীতিতে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
tmc

প্রতীকী ছবি।

'অসুস্থতা'তেও মিলল না রেহাই। তৃণমূল নেতার বাবাকে খুনের চেষ্টার মামলায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেন দাপুটে তৃণমূল নেত্রী তথা বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কাকলী তা গুপ্ত । তাঁকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে বর্ধমান আদালত। একই মামলায় দেষী সাব্যস্ত হওয়া অপর ১২ জন তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের সাজার কথা শুনিয়েছে আদালত।শুক্রবার বর্ধমান আদালতের ফাস্ট ট্রাক সেকেণ্ড কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্র এই সাজা ঘোষণা করেন।একই দিনে বিচারক কাকলী তা গুপ্তর অস্থায়ী জামিনও মঞ্জুর করেছেন । 

Advertisment

মামলাটি প্রায় ৭ বছরের পুরানো।বর্ধমান আদালতের ফাস্ট ট্রাক সেকেণ্ড কোর্টে সেই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছিল।বিচারক অরবিন্দ মিশ্র এই মামলায় দু’জনকে বেকসুর খালাস দিলেও গত সোমবার ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন।দোষীদের হেপাজতে নেওয়ার জন্যেও তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন।পুলিশ দোষীদের হেপাজতে নিতেই দোষীদের মধ্যে বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কাকলী তা গুপ্ত সহ মানস ভট্টাচার্য, কার্তিক বাগ এবং  সেখ জামাল অসুস্থতা অনুভব করেন । তাদের সবাইকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় ।বুকে তীব্র ব্যাথা ও ইসিজি রির্পোটে সমস্যা থাকায় কাকলী তা গুপ্তকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের উইংস অনাময়  সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । তিনি এখনও হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ।এইসব ঘটনা সহ নানা কারণে গত মঙ্গলবার সাজা ঘোষনার কথা থাকলেও তা আর হয় না। তিন দিন পিছিয়ে গিয়ে শুক্রবার হয় সাজা ঘোষণা । 

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছিল পূর্ব বর্ধমানের নাড়ীগ্রাম দাস পাড়ায়। সংঘর্ষে তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পালের বাবা দেবু পাল গুরুতর জখম হন। তা নিয়ে দেবু পালের স্ত্রী সন্ধ্যারাণী পাল ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সন্ধ্যারাণীর অভিযোগ ছিল,“শাসকদলের ক্ষমতাসীন নেতারা বেধড়ক মার মেরে তাঁর স্বামী দেবু পালের বাবার চোখ নষ্ট করে দিয়েছে। এই মামলার তদন্ত চালিয়ে বর্ধমান থানা ২০১৮ শালের ২২ জানুয়ারি বর্ধমান আদালতে চার্জশিট জমা দেয় । তার পরেই শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। 

সন্ধ্যারাণী পালের দায়ের করা মামালায় ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জনকেই সরকারি আইনজীবী বিরূপ ঘোষণা করেছিলেন।এমনকী জখম ব্যক্তি , অভিযোগকারী বা তার পরিজনরাও আদালতে মুখ খোলেননি।তবুও এই মামলায় ১৩ জনের কারাদণ্ডের সাজা হওয়ার নেপথ্য কারণটা যথেষ্টই চমকে দেওয়ার মতন।জানা গিয়েছে ,”এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের দু’জন শিক্ষক-চিকিৎসকের বয়ান ও তদন্তকারীদের জমা দেওয়া শয্যা-টিকিট।” 

Advertisment

 বিচার প্রক্রিয়া চলার সময় বর্ধমান মেডিক্যালের কলেজের দু’জন চিকিৎসক-শিক্ষক আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন।তাঁরা আদালতে জানিয়ে ছিলেন, “রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে আসার পরেই ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন জখম ব্যক্তি। 

এমনকি কারা কারা এই ঘটনায় জড়িত, সে কথাও জখম ব্যক্তি উল্লেখ করেছিলেন”। আইনজীবীরা জানান, ‘বেড টিকিট’-এ জখমের বলা সেই সব বর্ণনা লিখে রেখেছিলেন চিকিৎসকরা। আইনজীবীদের দাবি, চিকিৎসকদের বয়ানকে গুরুত্ব দিয়েই বিচারক এই মামলার রায় দিয়েছেন।কাকলী তা গুপ্তর শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তার সাজা বিচারক লঘু করলেও বাকি দোষীদের ক্ষেত্রে বিচারক কঠোর মনোভাব দেখিয়েছেন বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। 

সাজা শোনার পরে জখম দেবু পালের ছেলে জীবন পাল এদিন বলেন,“আদালতের রায় নিয়ে আমরা দুঃখিত বা উচ্ছ্বসিত–কিছুই নই। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে বাংলায় যে আইনের শাসন রয়েছে,বিচারও পাওয়া যায়,সেটা এদিন প্রমাণ হয়ে গিয়েছে“।বাংলায় ন্যায় বিচার মেলার ঢালাও প্রশংসা করা জীবন পাল সবাইকে অবাক করে দিয়ে এদিন আবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগে থাকার কথাও জানান ।” 

Bangla News Bengali News Bengali News Today Arrested Purba Bardhaman