করোনায় কাঁপছে বাংলা। অ্যাম্বুলান্স থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে রোগী ও তাঁদের পরিবারের গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ। গোদের উপর বিষ ফোঁড়া সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি। অতিমারী সংকটে এই অবস্থা বদলের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন এ সমাজেরই এক দল বিশিষ্ট জন। সংক্রমিত ও তাঁদের আত্মীয়দের ঝক্কি এড়াতে গড়ে তুলেছেন 'কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক'। এই দলে রয়েছেন সপ্তশৃঙ্গজয়ী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, মডেল মাধবীলতা মিত্র সহ একদল তরুণ চিকিৎসক ও অন্যান্য ক্ষেত্রের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বরাও। আপাতত এই দলের সদস্য সংখ্যা দু'শর বেশি।
'করোনা চিকিৎসায় স্বাস্থ্য পরিষেবা কোথায় মিলছে, কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে সহ রোগীর আত্মীয়দের সামাজিকভাবে সহায়তার সব ব্যবস্থা আমরা করেছি। প্রয়োজনে সংস্থার ২৪ ঘন্টার হেল্প লাইন নম্বরে যখন খুশি ফোন কে সহায়তা পাওযা যাবে।' জানালেন সত্যরূপ সিদ্ধান্ত।
অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়তে সংকট মোকাবিলার দলও তৈরি করে ফেলেছেন সত্যরূপ, মাধবীলতারা। দু'টি অ্যাম্বুল্যান্স 'কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক' এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। সাতটা মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ী পর্বতারোহীর কথায়, 'অ্যাম্বুলান্স না পওয়ায় প্রত্যেকদিন রোগী হয়রানির খবর সামনে আসছে। বেশ কয়েকজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এই রোগের সঙ্গে সামাজিক ভয়-ভীতিও জড়িত- যা সরকারকে মহামারী মোকালায় বেগ দিচ্ছে।'
এই দলের সদস্যা এসএসকেএম-এর ইন্টার্ন সোমদত্তা শতপতি বলছিলেন, 'চিকিৎসার মাধ্যমে করোনা সেরে যায়। এটা সকলকে বুঝতে হবে। অযথা ভীতি সমাজে বিরূপ প্রবাব ফেলছে। কোভিড ওয়ার্ডে আমি কাজ করেছি। সেখানে টানা কাজ করে আমি ক্লান্ত। কিন্তু, যখনই কেউ সহায়তার জন্য ফোন করছেন তখন তাঁদের পরামর্শ দিচ্ছি। এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সবার সমর্থনের প্রয়োজন।'
করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার গঠিত টাস্ক ফোর্সের সদস্য ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী সানডে এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক করোনাকালে সামাজিক বিষয়টি উপলব্ধি করেছে। কোথায় গেলে চিৎসা মিলবে সংস্থা তা রোগী ও তাঁদের পরিবারকে জানাচ্ছে। তাঁদের মেডিক্যাল সাহায্যও করছে। এমনকী অতিমারী নিয়ে মানুষকে সতর্ক করছে।'
ইতিমধ্যেই যেসব রোগী বা তাঁদের বাড়ির লোকেরা করোনা চিকিৎসার জন্য হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁরাও 'কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক' এ যোগ দিয়েছেন। এই রকমই এক সদস্যের কথায়, 'সরকারের একার পক্ষে করোনা মোকাবিলা সম্ভব নয়, দেখে ভাল লাগছে যে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ এই ধরনের সহায়তার কথা বিবেচনা করছেন।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন