স্বস্তি জাঁকিয়ে বসতে না বসতেই ফের আশঙ্কা। বঙ্গে লাফিয়ে বাড়ল দৈনিক করোনা সংক্রমণ। তবে মৃত্যুর হার কমেছে সামান্য। কমেছে অ্যাকটিভ রোগী ও সুস্থতার হারও। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ৮৮৪ জন, মঙ্গলবার যা ছিল সাতশোর বেশি। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ বাড়ল প্রায় ২০০। একদিনে করোনার বলি ২৮। আগের সিন এই সংখ্যা ছিল ৩২।
পজিটিভিটি রেট ১.৮৯ শতাংশ।করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিল রাজ্য। ক্রমশ কমছিল সংক্রমণ, অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা। যদিও মৃত্যুর হার নিয়ে চিন্তা ছিলই। বুধবারের পরিসংখ্যান সেই চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিল। লাফিয়ে বাড়ল সংক্রমণের হার। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, এই মুহূর্তে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ১৫,৩৯৫। গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডের কবল থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৪৭০ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১৯,৭১,৮২৬। মহামারীতে প্রাণহানি হয়েছে মোট ২০,৯১২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মোট করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৬,৮৩৬। এর মধ্যে ১.৮৯ শতাংশ রিপোর্ট পজিটিভ।
মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে রাজ্যে জারি কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ। আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত তা জারি থাকবে। বিভিন্ন অফিস, অডিটোরিয়াম, প্রেক্ষাগৃহে ৭৫ শতাংশ উপস্থিতির অনুমতি রয়েছে। রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলছে নাইট কারফিউ। জোরকদমে চলছে টিকাকরণ। ইতিমধ্যে ১২ কোটি ৩৫ লক্ষের বেশি মানুষ করোনা ভ্যাকসিন পেয়ে গিয়েছেন। তা সত্ত্বেও বুধবারের কোভিড গ্রাফ মাথাব্যথা বাড়াল।
সেই সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা সামান্য কমতেই কিছুটা আশার আলো দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৩৬। মৃত্যু হয়েছিল ৩২ জনের। বুধবার আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা বেড়ে হয়েছে ৮৮৪ তবে মৃত্যুর সংখ্যা সামান্য কমে হয়েছে ২৮। এদিকে রাজ্যে পরপর কয়েকদিন করোনায় মৃত্যের সংখ্যা ছিল ৩০ এর ওপর। এ ব্যাপারে ডাঃ কাজল কৃষ্ণ বনিক জানিয়েছেন, ‘আগামী দিনে সংক্রমণের মাত্রা আরও কমবে সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে কমবে মৃত্যু। তবে করোনা ঢেউ এখনও বর্তমান। আমাদের সকলকে কোভিড বিধি যথাযথ ভাবে মেনে চলতে হবে’।
দৈনিক মৃতের সংখ্যার রেকর্ড অনুসারে গত কয়েকদিনে বঙ্গে প্রতিদিন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩০ বা তার ওপর গত ২৪ ঘন্টায় এই সংখ্যা নেমেছে ৩০’র নীচে । ডা. বনিক জানান, ‘এটি অত্যন্ত উদ্বগের বিষয়। দেখা যাচ্ছে মূলত তিন ধরণের রোগী কোভিডে মারা যাচ্ছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছে কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত বয়স্ক রোগী, এমন রোগী যাদের আগে কোমর্বিডিটি ছিল, এবং অনেকের ক্ষেত্রে দেরিতে করোনা উপসর্গ ধরা পড়ায় চিকিৎসার সময়টুকুও অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে না’। যেহেতু রাজ্যে মৃত্যুহার ১.০৪ শতাংশে রয়ে গেছে, বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন যে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস পাবে। তবে কোভিড-উপযুক্ত আচরণ বজায় রাখার প্রয়োজন এখনও রয়েছে মত অধিকাংশেরই।