চিরঘুমে সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত, সিঙ্গুরের তাপসী মালিক হত্যাকাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে ছিল বিরাট অভিযোগ

তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিলেন।

তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিলেন।

New Update
Suhrid Dutta passes away

সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত

চির ঘুমে সুহৃদ। এদিন সকালে সিঙ্গুরে নিজের বাসভবনে মারা গেলেন সিঙ্গুরের সিপিএম নেতা সুহৃদ দত্ত। মৃত্যকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি চর্মরোগে ভুগছিলেন। ২০০৬ সালে বামফ্রন্ট বিধানসভায় জেতার পর সিদ্ধান্ত হয়েছিল সিঙ্গুরে শিল্প হবে। কর্মসংস্থান হবে প্রচুর মানুষের। আর এই জন্য ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে কৃষকদের থেকে। সেই জমি টাটা গোষ্ঠীকে লিজে দেওয়া হবে গাড়ি কারখানা তৈরির জন্য। সিঙ্গুরে তৎকালীন পার্টির জোনাল সম্পাদক ছিলেন প্রয়াত বাম নেতা সুহৃদ দত্ত। সেইসময় পার্টি যাঁদের ওপর ভরসা করেছিল স্থানীয় কৃষকদের জমি দিতে রাজি করানোর জন্য, তাঁদের অন্যতম ছিলেন তিনি।

Advertisment

২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গুরের বাজেমিলিয়ার কাছে অধিগৃহীত জমির ভিতরে তাপসী মালিক নামে এক অষ্টাদশীর ঝলসানো দেহ উদ্ধার হয়। তাপসী টাটাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের মিছিলে পরিচিত মুখ ছিলেন। এই ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় সারা বাংলা। অভিযোগ ওঠে শাসক দলের দিকে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিরোধীদের চাপে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। আর এরপরেই ২০০৭ সালে তাপসী মালিকের হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তৎকালীন সিঙ্গুরের জোনাল সম্পাদক সুহৃদ দত্ত ও আরেক সিপিএম কর্মী দেবু মালিককে গ্রেফতার করে সিবিআই। বিনা দোষে তাঁদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল সিপিএম। চন্দননগর এসিজেএম কোর্ট দুজনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিলেও বছর দুয়েকের মধ্যে হাইকোর্ট থেকে দুজনেই মুক্তি পান।

আরও পড়ুন- মহুয়াকে বহিষ্কারেই সম্মতি এথিক্স কমিটির, ডিসেম্বরে ভাগ্য নির্ধারণ

Advertisment

আরও পড়ুন- দুর্নীতির পাহাড়ে অবাধ বিচরণ মিলমালিক থেকে এজেন্টদের, কোন পথে ‘লুঠতরাজ’?

কিন্তু, জেলে থাকাকালীনই বিরল চর্মরোগে তাঁর দুই পা-ই প্রায় অকেজো হয়ে যায়। তখন থেকে প্রায় ঘরবন্দি ছিলেন। তবে তাপসী মালিক হত্যাকাণ্ডে সুহৃদ দত্ত আদৌ জড়িত ছিলেন, নাকি তাঁকে জড়ানো হয়েছিল, সেই সম্পর্কে সিঙ্গুরবাসীর মধ্যে বিতর্ক আছে। তাই তো মৃত্যুর কয়েক বছর আগেই এক সাক্ষাৎকারে দুঃখ করে জানিয়েছিলেন, 'সুবিচার পেলাম না।' প্রয়াত সাংসদ রূপচাঁদ পালের ঘনিষ্ঠ অনুগামী সুহৃদ দত্ত খুব অল্প বয়সে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেছিলেন। সাংগঠনিক দক্ষতার জোরে কৃষক ফ্রন্ট-সহ বিভিন্ন শাখা সংগঠনের গুরুদায়িত্ব তিনি পেয়েছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সিপিএমের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। আগে থেকেই তাঁর চোখ দান করা ছিল। এদিন তাঁর মরদেহ শ্রীরামপুর ঘাটে দাহ করা হয়। বৃহস্পতিবা দলের রাজ্য নেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য এসেছিলেন প্রয়াত নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।

Tata Motors High Court CPIM tmc