চলছে বর্ষবরণের উল্লাসে। বাংলাজুড়ে উৎসবের আমেজ। পার্কস্ট্রিট মুড়েছে আলোয়। এই শুযোগে জনসংযোগ সারছে বহু রাজনৈতিক দল। সংগঠনগুলির তরফে নেওয়া হয়েছে একাধিক অনুষ্ঠান কর্মসূচি। এর মাঝেই অভিনব কায়দায় পথে নামলেন বামেরা। সিপিআইএম নেতাদের দেখা মিলল ভিক্টোরিয়া, চিরিয়াখানায়। কচিকাচা থেকে যুগল, মধ্য বয়স্ক থেকে বৃদ্ধ সকলের কাছেই পৌঁছে গেলেন সুজন চক্রবর্তী , কলতান দাশগুপ্তরা। সঙ্গে কৌট বাজিয়ে চলল তহবিল সংগ্রহ-ও।
সিপিআইএমের কলকাতা জেলা কমিটির তরফে বর্ষশেষের এই অভিনব কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়েছে। শুধু আনন্দে মেতে থাকা মানুষদের সঙ্গেই নয়, আলিমুদ্দিনের নেতা কথা বললেন ভিক্টোরিয়া, চিড়িয়াখানা চত্বরে বসা ঝালমুড়ি, আইসক্রিম ওয়ালা সহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রেতাদের সঙ্গে। জানলেন তাদের হাল হকিকত৷
কেন হঠাৎ বর্ষশেষে এই কর্মসূচি? সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'সিপিআইএমের তরফে গত কয়েকদিন ধরেই শহর-গ্রামে জনসংযোগ কর্মসূচি চলছে। বিমানদা সহ পার্টির নেতারা পথে নেমেছেন। আমরাও নেমেছি। আজ এখানে মানুষের সমাগম হয়। তাই দেখা করলাম। জানলাম ওঁদের কথা। আমরাও আমাদের কথা জানিয়েছি। মানুষ সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যারা চোখ রাঙাচ্ছে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ নয়। মানুষের কথা আমরা মানুষের কাছে তুলে ধরছি। কবে ভোটবাক্সে তা প্রতিফলিত হবে বা হবে না, সেটা চিন্তা করছি না। আমি মনে করি নিজের মতো করে মানুষ ভোট দিতে পারলে তৃণমূল, বিজেপি সব উড়ে যাবে। সেই কারণেই সুষ্ঠুভাবে ভোট করতে দিতে ওরা রাজি না।'
সিপিএমের এই জনসংযোগকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, 'শীতঘুমে সিপিএম। অস্তিত্ব বাঁচাতে জাগার চেষ্টা করছে। কিন্তু, মানুষ ওদের ফের ঘুমোনোরই রায় ভোটবাক্সে দিয়ে দেবেন।'
একদা বাম দুর্গ ছিল বাংল। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকেক ক্রমশ ক্ষয় হচ্ছে সিপিআইএমের সংগঠনে। পক্ককেশধারীদের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে নতুন প্রজন্মকে তুলে আনা হয়েছে। তাতেও অবস্থার বদল ঘটেনি। ১৯য়ের লোকসভায় বাম দলগুলি একটিও আসন পশ্চিমবঙ্গ থেকে পায়নি। শূন্য একুশের বিধানসভা ভোটেও। প্রায় ১ বছর আগে রাজ্যব্যাপী পুরভোটে অবশ্য একটি পুরসভা রয়েছে বামেদের দখলে। প্রবল উদ্দামে এরপর নানা কর্মসূচি পালন করছে আলিমুদ্দিনের নেতারা। ভিড় যে একদম হচ্ছে না সেরকম নয়। কিন্তু, তা ইভিএমে রূপান্তরিত হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান মহঃ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীরা। তাই পঞ্চায়েতের আগে জনসংযগে এই অভিনব কায়দা বেছে নেওয়া হল বলেই মত কাস্তে, হাতুড়ি, তারা দলের অনেকের।