আলিমুদ্দিন থেকে দলের নেতারা যতই বিজেপির বিরোধিতা করুন না-কেন, নীচুতলার সিপিএম কর্মীরা তার পরোয়াও করছেন না। এর আগে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং-পুরসভায় বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা গিয়েছে সিপিএমের কর্মীদের। এবার বিজেপির ঘোষিত কর্মসূচিতে সিপিএমের পতাকা হাতে নিয়েই শামিল হতে দেখা গেল হারিট পঞ্চায়েতের বাম কর্মীদের। যা দেখিয়ে বিজেপি নেতারা বড়াই করে স্পষ্ট জানালেন যে রাজ্যে বিজেপিকেই মানুষ প্রকৃত বিরোধী মনে করে। আর, সেই কারণেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির পতাকার তলায় অন্য দলের কর্মীরাও এসে জড় হচ্ছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির দাদপুরে। শুক্রবার এখানকার হারিট পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপির ডেপুটেশন কর্মসূচি ছিল। সেই মতো শুক্রবার বেলা ১১টায় হরপুর তেমাথা থেকে মিছিল শুরু করেছিলেন বিজেপি কর্মীরা। নেতৃত্বে ছিলেন হুগলির বিজেপি নেতা সুরেশ সাউ, গোপাল উপাধ্যায়, ধীরাজ বিশ্বাস, অর্ঘ্য চক্রবর্তী-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামে জয়ধ্বনি করা থেকে বিজেপি জিন্দাবাদ স্লোগান দিতে শোনা যায় গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের। আর, সেই মিছিলেই অদ্ভুতভাবে দেখা গেল বেশ কয়েকটি সিপিএমের পতাকা।
সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজেদের সিপিএম কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেও দ্বিধা করলেন না আখতার হোসেন, সুজিত সাঁতরা, শম্ভুজিৎ দে-রা। একইসঙ্গে, তাঁরা জানিয়ে দিলেন, সিপিএমের হয়ে কোনও বিরোধিতা এই অঞ্চলে চলছে না। দলের নেতারাও কর্মীদের কোনও খোঁজ নেন না। অথচ, একটা সময় এলাকার সিপিএম কর্মী হিসেবে তাঁরা পরিচিত। সেই জন্য তাঁদের প্রতি বঞ্চনাও চলছে। আর সেই কারণেই তাঁরা প্রতিবাদ জানাতে বিজেপির মিছিলে শামিল হয়েছেন।
মিছিল হারিট পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতি, ১০০ দিনের কাজের টাকা না-দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে স্লোগান দেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা। এরপর বিজেপির একদল প্রতিনিধি পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন।
আরও পড়ুন- শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়ে গেল পূর্ব বর্ধমানের স্কুল, শোনা যাবে না পড়ুয়াদের কোলাহল
এর আগে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব অতীতে এই ধরনের ঘটনায় তাঁদের কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছেন। তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করেছেন। বিজেপির সঙ্গে নীতিগত লড়াই অক্ষুণ্ণ রাখতে তাঁরা যে বদ্ধপরিকর, তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, তারপরও বাস্তবের বাধ্যবাধকতা থেকে সেই কড়া শাসন যে সিপিএমের নীচুতলার কর্মীরা পরোয়াও করছেন না, শুক্রবার দাদপুরের ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।