নিয়োগ দুর্নীতিপূর্ণ হওয়ায় গত মাসেই চাকরি গিয়েছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের। গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গত সোমবারই ২০১৪ সালের টেট দুর্নীতির জেরে প্রাথমিকের ২৬৯ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে৷ এই বাতিলের তালিকায় রয়েছেন কালনার সিপিআইএম নেতা বীরেন্দ্রনাথ বসু মল্লিকের মেয়ে বৈশাখী বসু মল্লিকের নামও।
বীরেন্দ্রনাথ বসু মল্লি কালনা পুরসভার বহুদিন সিপিআইএম কাউন্সিলর ছিলেন৷ ছিলেন সিপিআইএমের প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র সহ সভাপতিও। বৈশাখীর মা গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির দাপুটে নেত্রী ছিলেন৷ এছাড়া বরখাস্ত শিক্ষিকা বৈশাখীর স্বামী শুভাশিস সরকার ২০১৫ সালের পুরভোটে কালনার সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন৷
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বৈশাখী বসু মল্লিক কালনার ধাপাসপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা পদে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশে এই চাকরি থেকে আপাতত বরখাস্ত তিনি।
এই ঘটনায় যেন অক্সিজেন পেয়েছে তৃণমূল। সিপিএম নেতার মেয়ের চাকরি পাওয়া এবং বরখাস্ত হওয়ার ঘটনাকে অস্ত্র করেছে তৃণমূলও৷ কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের দাবি, 'শুধু তৃণমূলের লোকেরাই চাকরি পেয়েছে বলে বিরোধীরা দাবি করছে, সেটা যে ঠিক নয়, এই ঘটনা তারই প্রমাণ৷' বিচারব্যবস্থার প্রতি শাসক শিবিরের আস্থা রয়েছে বলে দাবি করেছেন এই তৃণমূল নেতা।
২৬৯ জন বরখাস্ত শিক্ষক, শিক্ষিকার মধ্যে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের ১৭ জন৷
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় ২৬৯ জন উত্তীর্ণ ২০১৭ সালে চাকরি পেয়েছিলেন। এদের সকলরে নামই বাতিল করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তালিকা বাতিল হয়। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের নজরদারিতে সিবিআইয়ের সিট তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাবে। এি সিটের সদস্যদের বদল করা যাবে না। তদন্তকারীরা অন্য মামলার তদন্তেও যুক্ত হবে না। কলকাতা শাখার যুগ্ম আধিকারিক সিটের প্রধান হবেন। আগামী শুক্রবারের মধ্যে সিটের সদস্যদের নাম আদালতে জমা দিতে হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গত সোমবারই প্রাথমিকের ২৬৯ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে৷ এই শিক্ষকদের নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ৷ বরখাস্ত হওয়া এই শিক্ষকদের মধ্যেই রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কালনার এক সিপিএম নেতার মেয়ের নাম৷ যে ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে কালনায়৷
যে ২৬৯ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে, তাঁরা ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন৷ ২০১৭ সালে এই ২৬৯ জনের নামের তালিকা প্রকাশিত হয়৷ সেই তালিকাই বাতিল করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দেন তিনি৷
বরখাস্ত হওয়া ২৬৯ জনের মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলার ১৭ জনের নাম ছিল৷ সেই সতেরো জনের মধ্যে ছিলেন কালনার সিপিএম নেতা বীরেন্দ্র নাথ বসু মল্লিকের মেয়ে বৈশাখী বসু মল্লিকের নাম৷ এ হেন বৈশাখী ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে কালনার ধাপাসপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পদে যোগ দিয়েছিলেন৷ আদালতের নির্দেশেই আপাতত চাকরি গিয়েছে তাঁর৷ বিষয়টি জানাজানি হতেই যথেষ্ট শোরগোল ছড়িয়েছে কালনা শহর জুড়ে৷ বৈশাখীদেবীর প্রতিক্রিয়া নিতে তাঁর বাড়িতে গেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি৷ বৈশাখীর স্বামী জানান, তিনি বাড়িতে নেই৷ চাকরি যাওয়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ওই শিক্ষিকার স্বামী৷ পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নিয়েও কিছু বলতে চাননি তিনি৷