ঘড়িতে তখন বেলা ১১টা। মাথার ওপর গনগনে রোদ। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের ছাদ থেকে মেঝে। এমন সময় হঠাৎই অচেনা এক বিকট আওয়াজ। সঙ্গে সঙ্গেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। সকলে চিৎকার করতে থাকেন, চিড় ধরেছে ব্রিজে। যে কোনও ব্রিজ ভেঙে পড়ার দূরতম সম্ভাবনা দেখলেও নগরবাসী যে এখনও কতটা আতঙ্কিত, তার আঁচ পাওয়া গেল বুধবার। ফাটল সংলগ্ন এলাকার দোকানদাররা যে এই ঘটনায় এখনও আতঙ্কে রয়েছেন তা স্পষ্ট তাঁদের বক্তব্যে।
আওয়াজের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের ভাঙা অংশটি। ৪০ নং স্টলের সামনে মেঝের একটি অংশ হঠাৎই ফুলে ওঠে এবং ভেঙে যায় শক্ত পাথরের গোটা চারেক টালি। রাতারাতি ওই স্থানে এসে পৌছন স্কাইওয়াকের মেরামতি কর্মীরা। দর্শনার্থীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য প্রথমে ওই অংশটি গার্ডওয়াল দিয়ে আড়াল করে দেওয়া হয়। বিকেলের দিকে মেরামতি কর্মীরা উঠে থাকা টালিগুলোকে ফের সমান করে দিয়ে যান। জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ হবে।
আরও পড়ুন: ৮ মাস পর নিঃশব্দে খুলল বাগরি
এখন প্রশ্ন, স্কাইওয়াক উদ্বোধনের চার মাসের মধ্যে কী করে এমনটা ঘটতে পারে? স্কাইওয়াকে ডালা ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, "এমন কিছু নয়।" কিন্তু অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, এই ধরণের ঘটনা কেন হবে, যেখানে মাত্র চার মাস আগেই খোলা হয়েছে স্কাইওয়াক। কিছু একটা সমস্যা হয়েছে নিশ্চয়ই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আতঙ্কিত এক ব্যবসায়ী বলেন, "কী জানি, ভেঙে পড়বে না তো!" এদিকে কেএমডিএর পক্ষ থেকে এখনও জানানো হয়নি, ঠিক কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে।
৪০ নং স্টলের সামনে মেঝের অংশটি হঠাত্ৎই ফুলে ওঠে, এবং ভেঙে যায় শক্ত পাথরের গোটা চারটে টালি।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে কামারহাটির পুরপ্রধান গোপাল সাহা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেছেন, "ওটা কিছু না। সাধারণ বিষয়। যে ধরনের টাইলস ব্যবহার হয়, তা গরমের কারণে ফেটে যায়। দু-দিন ধরে অত্যধিক রোদের তাপ পড়েছিল ওই অংশে, যে কারণে ফেটে যায় টালি। স্বাভাবিকভাবেই কোনো পাথর ফাটার আওয়াজ জোরে হবেই। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।" কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হল কি? গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতেও তাহলে ভাঙতে পারে একের পর এক টালি? এই প্রশ্নের সঠিক জবাব পাওয়া যায় নি। এদিকে শোনা যাচ্ছে, লোহার ওয়েল্ডিং খুলে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটে। নবনির্মিত কোনো প্রকল্পে এমনটা হওয়া কি স্বাভাবিক? প্রশ্ন উঠছেই।