কৃষি দপ্তর এবং উদ্যানপালন দফতর রের সহযোগিতা পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেই নিজের জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করেছিলেন রতুয়ার এক যুবক। আর আজ সেই পেঁপে বিক্রি করেই লাখপতি ওই যুবক। নিয়মিত পাইকারেরা বাগান থেকে সরাসরি পেঁপে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ি লাগোয়া বাগানে বসেই পেঁপে চাষ করেই আয় করছেন আড়াই লক্ষ টাকারও বেশি। চাচল মহকুমার রতুয়া থানার বাহিরকাপ গ্রামের ঘটনা। নিজের আম বাগানের মধ্যেই বিকল্প চাষ হিসাবে পেঁপে গাছ লাগিয়েছিলেন যুবক শিশু ওয়াহাব। সেখান থেকে এখন পেঁপে বিক্রি করে সাবলম্বী হয়েছে ওই যুবক।
আমবাগানের মধ্যেও যে অন্য কোনও লাভজনক ফসল চাষ করা যায় তার পথ দেখাচ্ছেন রতুয়া থানার বাহিরকাপ গ্রামের বাসিন্দা শিশু ওয়াহাব। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে পড়াশোনা ছেড়েছিলেন তিনি। তারপরেই বাবার কৃষি কাজে হাত লাগান। নিজের প্রায় তিন বিঘে আম বাগান রয়েছে। বছরের এক সময়ে আম বাগান থেকে রোজগার হয়। তাই আম বাগানের ভেতরে বিকল্প ফসল চাষের চিন্তাভাবনা শুরু করেন। সেখান থেকেই পেঁপে চাষের ভাবনা আসে। আম বাগানের মধ্যেই ফাঁকা জায়গায় পেঁপে গাছ লাগিয়ে দেন। নিয়মিত পরিচর্যা ও সঠিক পদ্ধতিতে চাষ, এতেই বাজিমাত। গত কয়েক বছরেই পেঁপে চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছেন তিনি।
পেঁপে চাষি শিশু ওয়াহাব জানান, তিন বিঘে আমবাগানেই নির্দিষ্ট দূরত্বে পেঁপে গাছ রয়েছে। সেখান থেকেই আয় হচ্ছে তাঁর। সাধারণত বাজারে পাকা ও কাঁচা দুই ধরনের পেঁপের চাহিদা রয়েছে। তবে তিনি কাঁচা পেঁপেই বেশি বিক্রি করেন। এই বছর পাকা পেঁপে বিক্রি করছেন। বর্তমানে বাজারে এক কেজি পাকা পেঁপে ৩০ টাকা ও কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতেই মাসে রোজগার কুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার টাকা।
সারা বছর ধরেই পেঁপে চাষ করা যায়। তবে পেঁপে চারা বসানোর উপযুক্ত সময় মার্চ মাস। উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁপে চারা নিজের বাগানের বসান। বাইরে থেকে নিয়ে আসেন এই পেঁপের চারা। নিয়মিত জল ও পরিচর্যা করলেই পেঁপে গাছ ভাল হয়। তবে পেঁপেতে ভাইরাসের আক্রমণ সবথেকে বেশি। এই ভাইরাসের হাত থেকে পেঁপে গাছ ও ফলকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে পরিচর্যা ও কীটনাশক প্রয়োগ। একবার ভাইরাসের হাত থেকে পেঁপে গাছকে রক্ষা করতে পারলেই ব্যাপক পরিমাণে লাভবান সম্ভাবনা রয়েছে।
পেঁপে চাষি শিশু ওয়াহাবের কথায়, আমার দেখাদেখি আশেপাশের বেশ কয়েকজন কৃষক পেঁপে চাষের চেষ্টা করেছেন আম বাগানের মধ্যে। কিন্তু তারা সফল হননি। কারণ পেঁপে গাছকে ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। সে সময় গাছের পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে হয়। একবার ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারলে ভালো আয় হয় এই ফসল থেকে।