চা খেতে এসে আস্ত কাপ চিবিয়ে খাচ্ছেন ক্রেতারা। এমনই কাণ্ডে জোর চর্চা শুরু। লোকমুখে এমন এক আজব চায়ের দোকানের হদিশ ছড়িয়ে পড়তেই দোকানি এখন সুপার-ডুপার হিট! সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দফায়-দফায় ক্রেতা সামাল দিতে নাওয়া-খাওয়ার ফুরসত নেই চা বিক্রেতার।
Advertisment
কথায় বলে 'চায়ের সাথে টা ফ্রি'। নদিয়ার শান্তিপুরে এলে একথাই যেন ধ্রুব সত্য বলে মনে হবে। চায়ের সঙ্গে কাপ খেতে দলে দলে মানুষ আসছেন দোকানে। আট থেকে আশি, আজব এই চা পান তারিয়ে-তারিয়ে উপভোগ করবার সুযোগ কেউই ছাড়ছেন না। শান্তিপুরের 'মথুরার চা' নামে পরিচিত এই দোকান। দোকানদারের নাম মথুরা কর্মকার। প্রায় ৯ বছর ধরে এই চায়ের দোকান চালাচ্ছেন প্রৌঢ়। এই চায়ের দোকানের উপরে নির্ভর করেই সংসার চালান তিনি।
Advertisment
একটা সময় পুরসভার জল সরবরাহ কেন্দ্রে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতেন মথুরা কর্মকার। তবে সেই কাজ তাঁর চলে যায়। আচমকা কাজ খুইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন মথুরা কর্মকার। ঠিক করেন চায়ের দোকান খুলবেন। তবে এক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। শেষমেশ স্থানীয় কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তি ও বন্ধুবান্ধবদের সহযোগিতায় বাড়ির সামনেই তিনি চায়ের দোকান খুলে বসেন।
শুরু থেকেই ব্যবসায় অভিনব কিছু করার প্রয়াস ছিল তাঁর। মোবাইল ফোনে ইউটিউব ঘেঁটে তিনি দেখতে পান, জোয়ার, বাজরা, রাগীর মতো শস্য দানা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে চায়ের কাপ। এই কাপের মধ্যে রয়েছে বিস্কুটের উপকরণ। তবে এই কাপ পাওয়া যায় মূলত দক্ষিণ ভারতে। তবে কলকাতার ব্যবসায়ীদের অর্ডার দিলে তাঁরা এই কাপ আনানোর বন্দোবস্ত করে দেন। এরপর এই বিশেষ ধরনের চায়ের কাপের খোঁজে কলকাতায় পৌঁছে যান মথুরা কর্মকার। কলকাতা থেকেই এখন এই বিশেষ ধরনের চায়ের কাপ তিনি নিয়ে যান।
মথুরাবাবু জানিয়েছেন, প্রায় ৯ বছর ধরে তিনি মাটির ভাঁড়েই চা বিক্রি করেছেন। তবে সম্প্রতি বিস্কুটের কাপে চা বিক্রি চালু করেছেন। বিশেষ এই কাপে চা খেতে অনেকেই আসছেন। লোকমুখেই তাঁর এই দোকানের কথা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। তাই শান্তিপুর তো বটেই, এমনকী বাইরে থেকেও অনেকে দল বেঁধে যাচ্ছেন মথুরা কর্মকারের দোকানে চায়ের সঙ্গে কাপও খেতে।