scorecardresearch

অস্তিত্ব সংকটের চরম আভাস! কলকাতায় তাপমাত্রা পেরোবে ৫০ ডিগ্রি? রিপোর্ট ঘিরে চূড়ান্ত উদ্বেগ

আইপিসিসি রিপোর্ট অনুসারে, কলকাতা ১৯৫০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিশ্বের উষ্ণতম স্থানগুলির মধ্যে একটি।

west bengal Weather heat wave alert
সূর্যের গনগনে তেজ থেকে বাঁচতে ছাতাই ভরসা। এক্সপ্রেস ফটো-শশী ঘোষ

চৈত্র শেষে চাঁদিফাটা রোদ! গনগনে গরমে নাজেহাল হয়েছে বঙ্গবাসী! আগামী দিনে তাপমাত্রার পারদ আরও চড়বে?  তাপপ্রবাহের আশঙ্কাও সেই সঙ্গে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। শুকনো গরমে বাড়তে পারে প্রবল অস্বস্তি। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে কলকাতা ও দক্ষিণ বঙ্গের তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলতে পারে ৫০ ডিগ্রি? অন্তন তেমনই আভাস দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন রিপোর্ট।

IPCC রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কার্বন দূষণ এবং জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার কমাতে হবে। না হলে সাম্নেই অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর বিপদ। এপ্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ সুজীব কর বলেন, ‘যে ভাবে কনক্রিটের ব্যবহার এবং দূষণের মাত্রা দিনে দিনে বাড়ছে তাতে আগামী দিনে গরম ভয়ঙ্কর আকার নিতে চলেছে। সেই সঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যেভাবে জুরাসিক যুগে ৫৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা ডাইনোসরদের অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছিল সেভাবে ৫০ ডিগ্রি গরমে মানবজাতিও অস্তিত্বের সংকটে পরতে পারে।

রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “বরফের পাতলা চাদরে মুড়িয়ে রয়েছে মানবসভ্যতার আগামীর চাবিকাঠি  এবং এই বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। আমাদের বিশ্বের সমস্ত দেশকে জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপ একযোগে পালন করতে হবে। অবিলম্বে  গ্রীন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে হবে”। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী দেশগুলোকে ২০৩৫ সালের মধ্যে দূষণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে। রাষ্ট্রসংঘের বিজ্ঞান কমিটি জানিয়েছে “বিশ্বে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০৩৫ সালের মধ্যে তার গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন ৬০ শতাংশ কমাতে হবে”।

কলকাতার তাপমাত্রা এবারের চৈত্রেয় রেকর্ড ছুঁয়েছে। স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি ছিল তাপমাত্রা।  সেই সঙ্গে ছিল তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তাও। IPCC রিপোর্ট অনুসারে, গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কম না হলে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি শহর সম্ভবত শতাব্দীর শেষের দিকে রেকর্ড গরমের সম্মুখীন হবে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, শান্তিনিকেতন এবং আসানসোলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৫১.৪ ডিগ্রি। আইএমডি বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করেছেন গ্রীষ্ম ক্রমশই প্রসারিত হচ্ছে।

রিপোর্টে আরও বলা কলকাতায় কয়েক দশকের মধ্যে বছরে ১৫০ দিনের কাছাকাছি তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩৫ ডিগ্রি বা তার বেশি। বিশিষ্ট আবহাওয়াবিদ সুজীব কর বলেছেন, “আমরা IPCC রিপোর্ট বিশ্লেষণ করেছি এবং দেখেছি যে শহরের তাপমাত্রায় প্রায় ২০১৪ সালের পর থেকে ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে”।

আইপিসিসি রিপোর্ট অনুসারে, কলকাতা ১৯৫০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিশ্বের উষ্ণতম স্থানগুলির মধ্যে একটি। এই সময়ের মধ্যে শহরের গড় তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি বেড়েছে, এরপর রয়েছে তেহরান (২.৩ ডিগ্রি) এবং মস্কো (১ ডিগ্রি)।  সুজীব বাবু বলেন, “কলকাতায় প্রয়োজনীয় সমস্ত উপাদানই রয়েছে। কংক্রিটের যথেচ্ছ ব্যবহার, অত্যন্ত সীমিত গাছপালা, এসির বহুল ব্যবহার, মানব সৃষ্ট দূষণ, সব মিলিয়ে কলকাতায় পরিস্থিতি আগামী দিনে আরও খারাপের সভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি যে চরম তাপ এবং তাপ-প্রবাহের ঘটনা বাড়তে চলেছে,” তার কারণ হিসাবে জলবায়ূর পরিবর্তন সেই সঙ্গে থর মরুভূমিতে সবুজ ফেরার দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি। তিনি জানান, মধ্যপ্রদেশ যেখানে বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটাই কম ছিল সেখানে এখন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে দক্ষিণ বঙ্গের একাধিক জেলার তাপ মরুশহরকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে সবুজায়ন হচ্ছে থর মরুভূমির!‌ আর সেকারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই কিন্তু সত্যি”।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Cut emissions or brace for 50 degree plus celsius in kolkata south bengal in few decades