মৃত মায়ের দেহ কাঁধে ছেলে ও বৃদ্ধ বাবা! জলপাইগুড়ির এই হৃদয় বিদারক ঘটনার ছবি সামনে আসতেই তোলপাড়। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের এই ঘটনা নিয়ে শাসকদলকেই দুষছে বিরোধীরা। 'তৃণমূলের আমলে প্রতিটি স্তরে কাটমানি সংস্কৃতি মনকে অসাড় করে দিচ্ছে!' তৃণমূলকে তুলোধনা করে টুইট বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যের।
বৃহস্পতিবার হৃদয়বিদারক একটি দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছে জলপাইগুড়ি শহর। টাকার অভাবে শববাহী গাড়ি মেলেনি। মৃত মায়ের দেহ কাঁধে তুলেই হেঁটেছেন ছেলে। মায়ের দেহ একদিকে কাঁধে তুলেছেন ছেলে, অন্যদিকে তাঁকে সঙ্গ দিয়েছেন বৃদ্ধ বাবা। এভাবেই শহর জলপাইগুড়ির অনেকটা পথ হেঁটে গিয়েছেন বাবা-ছেলে। সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেই মর্মান্তিক ছবি ছড়িয়ে পড়তেই নিন্দার ঝড় ওঠে। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স ও শববাহী গাড়িচালকরা একপ্রকার 'লুঠ' চালাচ্ছেন বলে ফের একবার সোচ্চার হয়েছে সমাজের বিভিন্ন মহল।
জলপাইগুড়ির এই ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলকেই নিশানা করেছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। টুইটে তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করে তিনি লিখেছেন, 'এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনের মডেল। অ্যাম্বুলেন্স ৩ হাজার টাকার কম নিতে অস্বীকার করে। জলপাইগুড়িতে বাবা-ছেলে যুগল মহিলার মরদেহ কাঁধে চাপিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। তৃণমূলের শাসনে প্রতিটি স্তরে কাট-মানি সংস্কৃতি মনকে অসাড় করে দিচ্ছে।'
আরও পড়ুন- বন্দে ভারতে পাথর নিক্ষেপ, তৃণমূলকে দুষেও শেষমেশ ঢোক গিললেন দিলীপ!
এদিকে, মর্মান্তিক এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের সাফাই, 'উত্তরপ্রদেশে যখন একই ঘটনা ঘটে তখন এরা চুপ থাকে। এখানে কিছু হলেই চিৎকার জুড়ে দেয়। বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- কনকনে শীত হাড় কাঁপাচ্ছে, ১০-এর ঘরে কলকাতার পারদ, আরও নামবে তাপমাত্রা?
জলপাইগুড়ির এই মর্মান্তিক ছবি নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, 'এক্ষেত্রে প্রশাসনের তো একটা গাফলিতি আছেই। নিশ্চই প্রশাসন বিষয়টি দেখবে। এটা তো একটা লজ্জার কথা। মানুষ হিসেবে সবারই লজ্জা হওয়া উচিত।' নাট্যকার কৌশিক সেন বলেন, 'সরকারি পরিকাঠামো একটা জায়গায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে এখনও কিছুই বদলায়নি। এটা একটা সার্বিক ব্যর্থতা।'