কোথাও একটা চাকরির ব্যবস্থা করেদেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন অসহায় তরুণী। সেই তরুণীকে সহবাসের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠলো পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
কুপ্রস্তারের অডিও ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও তার সত্যতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা যাাচাই করেনি। তবে ভাইরাল হওয়া ওই অডিও, ভিডিওকে কেন্দ্র করে জেলার রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। দায় এড়ানোর জন্য চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডল গোটা বিষয়টিকে চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন। আর বিরোধী দলের নেতৃত্বরা বলছে, 'এটাই তৃণমূলের নেতাদের আসল স্বরুপ ।'
দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডল শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নন। তিন দীর্ঘদিন কাটোয়ার অগ্রদ্বীপ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ২০০০ সালে তিনি প্রথম দাঁইহাট পুরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। পুনরায় ২০১৫ সালে দাঁইহাট পুরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে তিনি বিরোধী দলনেতা মনোনিত হন। এর পর ২০১৮ সালে অনাস্থা এনে পুরবোর্ডের পতন ঘটিয়ে শিশির মণ্ডলই পুর প্রধান হন। ২০২২ সালের পুরসভা নির্বাচনে ফের জয়ী হয়ে শিশির মণ্ডল দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান নিরবাচিত হন। একজন প্রাক্তন শিক্ষক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বর বিরুদ্ধে মেয়ের বয়সী তরুণীকে সহবাসের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ
ওঠায় বিস্মিত কাটোয়া মহকুমাবাসী।
মঙ্গলবার ভাইরাল হওয়া অডিও ও ভিডিও কথোপকথনে পুরুষ কন্ঠের ব্যক্তি দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডল বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও ভাইরাল হওয়া ওই অডিও এবং ভিডিওর সত্যতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা যাচাই করেনি। সেই কথোপকথন থেকে জানা যায়, তরুণী ২০২০ সালে স্নাতক হয়েছে। তিনি কাকু সন্মোধন করে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন তাঁর একটা চাকরি করে দেওয়ার জন্য। তুইতোকারি করে ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলার সময়ে চেয়ারম্যান তরুণীর বাবার নাম,বাড়ির ঠিকান,পারিবারিক অবস্থা এইসব বিষয়ে জানতে চান। পরে টেলিফোনে কথপোকথনের মধ্যেই চেয়ারম্যান ওই তরুণীক সহবাসের প্রস্তাব দিয়ে বসেন। আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে একটি লজে আসার কথা বলেন চেয়ারম্যান। এমনকি অডিওতে শোনা যাচ্ছে যে, চেয়ারম্যান ওই তরুণীকে বলছেন, 'আমাকে খুশি করতে পারলে অvsক কিছু পাবি, যেটা চাকরি করে মিলবে না।'
চেয়ারম্যান শিশির মণ্ডল যদিও ওই অডিও এবং ভিডিও কথোপকথন তাঁর নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, 'ওই অডিওতে আমার গলায় অন্য কেউ এইসব কথা বলছে। এই ধরনের অশালীন কাজ কোনদিনও আমি করতে পারি না।' একই সঙ্গে তিনি বলেন, 'চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসিয়ে আমার রাজনৈতিক কেরিয়ার নষ্ট করার জন্য কেউ এইসব করেছে। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সাইবার ক্রাইমের দ্বারস্থ হব।'
চেয়ারম্যান এমনটা বললেও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন, 'বিষয়টি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।'
অন্যদিকে জেলা বিজেপির সহ সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'এটাই তৃণমূলের নেতাদের আসল স্বরুপ। যতদিন যাবে তৃণমূলের নেতাদের এমন আরও অনেক কীর্তির কথা রাজ্যের মানুষ জানতে পারবেন। '