Advertisment

Dam Damage: ক্রমেই ক্ষতি বাঁধের, মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা! কলকাতার দোরগোড়া পর্যন্ত বন্যা-শঙ্কা!

Damodar river dam damage- ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে। দিনের পর দিন ধরে বেপরোয়া গাড়ি চলাচলে দামোদর নদের এই বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা এমনকী খোদ জেলাশাসকের কান পর্যন্ত এই খবর পৌঁছেছে। তাঁরা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দিয়েছেন। তবুও আতঙ্ক যেন কাটছে না এলাকার বাসিন্দাদের। তাই বাঁধ বাঁচাতে এবার নিজেরাই বেনজির তৎপরতা নিয়েছেন তাঁরা। একদিকে প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিদের নিয়মিত এব্যাপারে সজাগ করার কাজ চলছেই। উল্টোদিকে, তাঁরা নিজেরাও এককাট্টা হয়ে বাঁধ বাঁচাতে তুমুল তৎপরতা নিতে শুরু করেছেন।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
Damage to Damodar river dam is increasing due to heavy traffic in Jamalpur

Dam Damage: বাঁধের উপর দিয়ে ভারী যানবাহনের যাতায়াত আটকে দিচ্ছেন গ্রামবাসীরাই।

Damage of Damodar river dam: বেপরোয়া বালি কারবারিদের দৌরাত্ম্যে বিপন্ন দামোদরের গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ। যা চোখে পড়তেই সামনের মরশুমে বড়সড় বিপর্যয়ের আশঙ্কায় তটস্থ সেচ দফতর। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের (Jamalpur) বাঁধের উপর দিয়ে বালি বোঝাই ভারী যানবাহন চলচল আটকানোই এখন সেচ দফতরের কাছে বড় চ্যালেঞ্জের। তাই এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে সেচ দফতর জেলা ও ব্লকের সকল স্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে আবেদন জমা পড়েছে।

Advertisment

যদিও প্রশাসনের ভরসায় না থেকে বাঁধ রক্ষায় এখন থেকেই এককাট্টা হয়েছেন জামালপুরের দাদপুর, সারাংপুর ও হাবাসপুর গ্রামের বাসিন্দারা। নদ-নদী থেকে বালি (Sand) লুঠ হওয়াটা পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলায় নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে বালি কারবারিদের দৌরাত্ম্যে দামোদরের (Damodar) গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ বিপন্ন হয়ে পড়াটা কার্যতই নজিরবিহীন। তাই প্লাবন মরশুমে কী বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে, তা ভেবেই এখন শঙ্কিত দামোদর তীরবর্তী গ্রাম গুলির বাসিন্দারা। এমনকী তাঁরা ক্ষোভেও ফুঁসছেন।

তাঁদের সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও মাঝে মধ্যে দেখা যাচ্ছে। বাঁধের উপর দিয়ে বালি বোঝাই কোনও ভারী যানবাহন গেলেই দাদপুর, সারাংপুর ও হাবাসপুর গ্রামের বাসিন্দারই রুখে দাঁড়াচ্ছেন। দাদপুর গ্রামেই বসবাস করেন দামোদরের বাঁধ রক্ষা কমিটির অন্যতম নেতা তথা পাঁচরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান অশোক দাস। তিনি বলেন,“জামালপুরের পুলমাথা থেকে শুরু করে বর্ধমান ২ ব্লকের বড়শুল পর্যন্ত দামোদরের বাম দিকের বাঁধ 'ভারত রক্ষা আইনের' আওতাভুক্ত। গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেচ দফতরের। তা সত্ত্বেও দৌরাত্ম্য চলছেই। বালিবোঝাই ভারী যানবাহনের দাপট থেকেও বাঁধ মুক্ত হতে পারছে না।”

তিনি আরও বলেন, “বালি কারবারিদের দৌরাত্ম্য এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। অসাধু বালি কারবারিরা তাঁদের বালির গাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য বাঁধের ক্ষতি করে রাস্তা (Crossing Point) তৈরি করতেও দ্বিধা বোধ করেনি। দাদপুর, সারাংপুর ও হাবাসপুর এলাকা মিলিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার বাঁধের অংশের একাধিক জায়গাকেই তারা ক্রসিং পয়েন্টের জন্য বেছে নেয়। সেই ক্রসিং পয়েন্ট গুলিও বাঁধের ক্ষতির অন্যতম কারণ।”

আরও পড়ুন- Silk Nursery Centre: কম সময়ে দ্রুত রোজগারে দুরন্ত উদ্যোগ! অভূতপূর্ব তৎপরতা দিশা দেখাচ্ছে বেকারদের

তিনি জানিয়েছেন, সেচ দফতর উদ্বেগ প্রকাশ করার পরেও বাঁধের উপর দিয়ে বালিবোঝাই ভারী যানবাহনে চলাচলে পুরোপুরি লাগাম পড়েনি। গভীর রাতে বাঁধে নজর রাখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। এই কারণে বাঁধের আরও ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর। তাঁর আরও দাবি, সেচ দফতরের (Irrigation Department) আধিকারিকরাই জানিয়েছেন, বালিবোঝাই ভারী যানবাহন (Tractor) চলাচলের কারণে সালালপুর শ্মশানঘাট থেকে সারাংপুর পর্যন্ত বাঁধ (Left Embankment) খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাঁধের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ভূমি দফতর সহ ব্লক প্রশাসনের নানা মহলে চিঠি লিখে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন- Kolkata Fire: কলকাতায় বিধ্বংসী আগুন! মুহুর্মুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে এলাকা

এই বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের সাব-ডিভিশনাল অফিসের (ইদিলপুর ১) আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরাও বাঁধের দূরাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কোনও রাখঢাক না রেখেই তাঁরা জানিয়েছেন, বালিবোঝাই ভারী যানবাহন যাতায়াতের কারণেই দামোদরের বাম দিকের বাঁধের সালালপুর শ্মশান-ঘাট থেকে সারাংপুর পর্যন্ত অংশে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেছে।

কিন্তু দামোদরের বাম দিকের বাঁধের ক্ষতি নিয়ে কেন সেচ দফতর এত চিন্তিত? কেনই বা এই বাঁধ এত গুরুত্বপূর্ণ? এর উত্তরে বাঁধ রক্ষা কমিটির অন্যতম নেতা অশোক দাস বলেন, “প্লাবন মরশুমে ভয়াল রূপ ধারণ করে দামোদর। তখন যদি দামোদরের এই বাঁধে বিপর্যয় ঘটে যায় তাহল হাওড়া-বর্ধমান কর্ড ও মেইন এবং BDR রেলপথ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি কলকাতার (Kolkata) দোরগোড়া পর্যন্ত প্লাবনের কবলে পড়ে যাবে। তেমনটা হলে রাজ্যের শস্যগোলার কৃষি ক্ষেত্র-সহ জীবন ও সম্পত্তিরও প্রভূত ক্ষতি হয়ে যাবে। এসব ভেবেই সেচ দফতরের মতো আতঙ্কিত জামালপুরের দাদপুর, সারাংপুর ও হাবাসপুর গ্রামের বাসিন্দারাও। তাই হুমকি-শাসানি সত্ত্বেও গ্রামবাসীরাই এখন বাঁধের উপর দিয়ে বালি বোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ে প্রতিবাদে সরব হচ্ছেন।

আরও পড়ুন- Digha: এবার দিঘায় রাম মন্দির? অভূতপূর্ব তৎপরতার তুমুল চর্চা!

জেলাশাসক বিধান চন্দ্র রায় বলেন, “দামোদরের গুরুত্বপূর্ণ বাঁধের উপর দিয়ে বালির গাড়ি যাতায়াত করতেই পারে না। যদি এটা হয়, তবে তা রোখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" আর সেচ দফতরের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (দামোদর ক্যানেল ডিভিশন ১) প্রণব কুমার সামন্ত এবিষয়ে বলেন, “দামোদরের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি আমরাও জেনেছি। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছি। বাঁধের ক্ষতির বিষয়টি সন্মন্ধে ইদিলপুর ১ সাবডিভিশনাল অফিসের তরফে ইতিমধ্যেই জেলা ও ব্লক প্রশাসনের নানা মহলে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে।"

আরও পড়ুন- Premium: বাংলার ‘মিষ্টি গল্প’: ২৫০ বছর আগে এই মিষ্টির জন্ম, ওপার বাংলা থেকে গিয়েছিল ব্রিটেনের রানির দরবারে 

Purba Bardhaman Flood Like Situation River Dam Damodar River
Advertisment