দণ্ডিকাণ্ডে তপ্ত বাংলা। আদিবাসীদের নিয়ে তোলপাড় রাজনীতি। এবার আদিবাসীদের দণ্ডির ঘটনা পৌঁছল রাইসিনা হিলসে। তৃণমূলকে নিশানা করে ওই ঘটনায় হস্তক্ষেপ চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিলেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। পাল্টা সরব কুণাল ঘোষ। শুভেন্দু অধিকারীকে টেনে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন বিজেপির দিকে।
কী ঘটেছিল বালুরঘাটে?
বিজেপির অভিযোগ, তপন বিধানসভা কেন্দ্রের কিছু তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপরই দেখা যায় ‘প্রায়শ্চিত্ত কর্মসূচি’ আয়োজন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে মার্টিনা কিস্কু, শিউলি মার্ডি, থাকরান সোরেন, মালতি মুর্মু- এই চারজন মহিলাকে বালুরঘাট শহরের রাস্তায় দণ্ডি কাটানো হচ্ছে। এভাবেই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয় পর্যন্ত। তারপর ওই চারজনের হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়।
ভাইরাল সেই ভিডিও ঘিরে চর্চা শুরু হয়। সমালোচনার মুখে পড়ে ওই ঘটনার নিন্দা করে শাসক দল তৃণমূলও। বহিষ্কার করা হয় জেলা মহিলা তৃণণূল সভানেত্রীকে।
রাষ্ট্রপতিকে চিঠিতে কী লিখেছেন সুকান্ত?
দণ্ডিকাণ্ডে হস্তক্ষেপ দাবি করে এদিন রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। চিঠিতে সুকান্ত লেকেন, 'আপনাকে চিঠি লিখতে পারা সবসময়ই আমার সৌভাগ্যের, কিন্তু এবার লিখছি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মার্টিনা কিস্কু, শিউলি মার্ডি, থাকরান সোরেন, মালতি মুর্মু নামে চারজন দরিদ্র আদিবাসী মহিলার উপর স্বৈরাচারের একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা নিয়ে। এঁরা আমার নির্বাচনী এলাকায় থাকেন। 6 এপ্রিল তপন বিধানসভার অধীনে প্রায় 200 জন উপজাতীয় পরিবারের সদস্য আমার বালুরঘাট লোকসভা এলাকায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যা তৃণমূলের একাংশের নেতৃত্বের সহ্য হয়নি। তৃণমূল নেতৃত্ব এবং গুন্ডারা এই চারজনের পরিবারগুলিকে প্রচণ্ড চাপে ফেলে। ফের এঁদের টিএমসিতে যোগ দেওয়ায় বাধ্য করা হয়। এটা যদি গণতান্ত্রিকভাবে করা যেত, আমাদের কিছু বলার থাকত না। কিন্তু অমানবিক মধ্যযুগীয় স্বৈরাচারের মাধ্যমে তাদের জোর করে ১ কিমি "দণ্ডি" খাটানো হয়েছিল তৃণমূল পতাকা হস্তান্তরের আগে। আদিবাসীদের প্রতি টিএমসি নেতাদের মানসিকতা অনেক আগে থেকেই পরিচিত তাঁদের মন্তব্য এবং কার্যক্রমে। কিন্তু যশশ্রী প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি যখন শাসন ক্ষমতায় তখন এটা আর সহ্য করা যায় না। সর্বদা সংবেদনশীল প্রধানমন্ত্রী সবসময় দরিদ্রদের উন্নতি ও সম্মানের জন্য কাজ করেন। এই ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিরোধে মহামান্য রাষ্ট্রপতির অফিসের হস্তক্ষেপ অত্যন্ত কাম্য ভবিষ্যতে উপজাতি এবং মহিলাদের উপর স্বৈরাচার রোধে।
পাল্টা কী বলেছেন কুণাল ঘোষ?
সুকান্ত ঘোষের এই চিঠি প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'নির্লজ্জ, মিথ্যা, দ্বিচারিতা। তৃণমূল আগেই ওই ঘটনার নিন্দা করে সাংগঠনিক পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু জঙ্গলকন্যা রাজ্যের মন্ত্রী বীবাহা হাঁসদা সমন্ধে যখন শুভেন্দু অধিকারী বলেন আমার জুতোর নীচে রাখব। তখন আদিবাসীদের প্রতি সুকান্ত মজুমদারদের প্রেম কোথায় থাকে। তখন কেন ওঁরা রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লেখেন না? কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের মতো মহিলাদের সূর্পনখা বললে কেন প্রতিবাদ করেন না ওনারা?'
জবাবে বঙ্গ বিজেপি সভাপতির দাবি, 'ওসব কে কী বলেছেন ছেড়ে দিন। এখন দেখুন আদিবাসীদের উপর এ রাজ্যে কী হচ্ছে।'