উত্তরবঙ্গের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে একের পর এক মনোমুগ্ধকর এলাকা। একবার যেখানে পা পড়লে মনা বাঁধা পড়ে যায়। সুন্দর-স্নিগ্ধ সেই সব এলাকায় দিন কয়েকের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা গোটা জীবনের অমূল্য এক স্মৃতি হয়ে রয়ে যায়। এই প্রতিবেদনে উত্তরবঙ্গের আরও এক অপূর্ব এলাকার সন্ধান রইল। ইঁদুর দৌড়ের জীবন থেকে নিন ক্ষণিকের আরাম। পছন্দের মানুজনকে সঙ্গে নিয়ে একবার ঢুঁ মেরে আসুন বাংলারই অনিন্দ্যসুন্দর এক প্রান্ত থেকে।
তাকদা, কথায় বলে দার্জিলিঙের এই এলাকা নাকি রঙিন অর্কিডের স্বর্গরাজ্য। দার্জিলিঙের খুব কাছেই ছবির মতো সাজানো নিরিবিল-নিঝুম ছোট্ট জনপদে মুঠোয় ধরা যায় কুয়াশা। গোটা গ্রাম ঘিরে ব্রিটিশ আমলের চা বাগান। সারি দিয়ে যেন সাজানো পাইন গাছের সারি। এককথায় উত্তরবঙ্গের এই এলাকার শোভা অনবদ্য। এখানকার অভূতপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ঠিক ভাষায় প্রকাশ কঠিন। তাকদার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এখানকার অর্কিড হাউস। এখানে এমন অনেক অর্কিডের সন্ধান মিলবে যা অন্য কোথাও আপনি দেখতে পাবেন না।
আরও পড়ুন- পাহাড়-ঢালে সবুজ গ্রামের বুক বেয়ে বয় নদী, উত্তরবঙ্গের এতল্লাট এককথায় অসাধারণ!
ব্রিটিশ আমলের বেশ কিছু বাংলো প্যাটার্নের বাড়ি রয়েছে তাগদা গ্রামে। দেখলেই বুঝবেন সেগুলি কত পুরনো। ব্রিটিশরা এই তাকদাজুড়ে সুগন্ধি চায়ের চাষ করাতো। সুগন্ধি চায়ের জন্য তাকদা বিখ্যাত। তাকদা থেকে খানিকটা দূরেই রয়েছে লামাহাটা, মংপু, তিনচুলে-সহ আরও নজরকাড়া বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র। চাইলে ঘুরে আসতেই পারেন। মোটের উপর ব্যস্ত জীবন থেকে ক্ষণিকের আরাম নিতে গেলে উত্তরবঙ্গের এতল্লাট একেবারে পারফেক্ট চয়েজ।
আরও পড়ুন- ভুলে যাবেন দীঘা-পুরী! বাংলার এই সমুদ্রতটের শোভা লজ্জায় ফেলবে অতীব সুন্দরী রমণীকেও
তাকদায় যাবেন কীভাবে?
শিলিগুড়ি থেকে এই তাকদা গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এনজেপি থেকে এই এলাকার দূরত্ব মেরেকেটে ৬৫ কিলোমিটার। রেলপথে গেলে নিউ জলপাইগুড়ি বা এনজেপি স্টেশনে নেমে পড়তে হবে। এরপর সেখান থেকে তাকদায় যাওয়ার জন্য গাড়ি মিলবে।
আরও পড়ুন- বেড়ানোর ১৬ আনা আনন্দ এখানেই! কান পাতলেই শুনবেন জল-জঙ্গলের অদ্ভুত ফিসফিসানি!
তাকদায় থাকবেন কোথায়?
এখানে থাকার জন্য তেমন হোটেল মিলবে না। তবে একাধিক হোম স্টে রয়েছে। হোম স্টে-গুলির অধিকাংশই ব্রিটিশদের তৈরি করা বাংলো। চারিদিকে সবুজঘেরা পাহাড়ের মাঝে এই বাংলোগুলিতে থাকার ষোলোআনা মজা পাবেন। ব্রিটিশরা দেশ ছাড়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারাই তাদের তৈরি বাংলোগুলি অধিগ্রহণ করে নেয়। এখান তাঁরাই তাকদায় হোম স্টে পরিষেবা দিচ্ছেন। মোটামুটি জনপ্রতি থাকা-খাওয়ার খরচ দিনে এক হাজার থেকে বারোশো টাকার মধ্যে।