বগটুই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের রহস্যমৃত্যুর জেরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। ঘটনাস্থল রামপুরহাট সোমবার রাত থেকেই উত্তপ্ত। বগটুই গ্রামের বাসিন্দারা লালনের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে। মঙ্গলবার ক্ষিপ্ত গ্রামবাসী ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। সড়কের মাঝখানে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। এবার লালনের মৃত্যুতে সিবিআইকে কাঠগড়ায় তুলে তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন তাঁর স্ত্রী।
রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি সেই মামলার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। সূত্রের খবর, লালন শেখের স্ত্রী ওই তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বীরভূম জেলা পুলিশের সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে জানিয়েছেন, তিন সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে লালন শেখের স্ত্রী অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই তিন আধিকারিক বগটুই গণহত্যার তদন্ত করছিলেন।
সিবিআইয়ের দাবি, লালন শেখকে সোমবার বিকেলে অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচাগারে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি। যদিও লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি রামপুরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। দাবি করেছেন, হেফাজতে অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে লালনকে।
আরও পড়ুন CBI জিম্মায় লালন-মৃত্যু, ফুঁসছে তৃণমূল, ‘মোক্ষম’ পদক্ষেপ করছেন মমতা
মঙ্গলবার রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। ক্যাম্পের ভিতরে তাঁরা ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশি বাধায় তাঁরা ব্যর্থ হন। বিক্ষোভকারীরা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভের আঁচ আছড়ে পড়ে কলকাতাতেও। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর কলকাতার নিজাম প্যালেসের সিবিআই অফিসের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখায়। এক কথায় বগটুই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যু ঘিরে সিবিআই বেশ প্যাঁচে পড়েছে।
আরও পড়ুন লালন-মৃত্যুতে প্যাঁচে CBI, আদৌ আছে গাফিলতি? দেখতে কলকাতায় সংস্থার দুঁদে কর্তা
এদিকে, লালন শেখের মৃত্যুর কারণ জানতে বর্তমান কোনও বিচারপতির পর্যবেক্ষণে তদন্ত করুক কলকাতা হাইকোর্ট। এই আবেদন জানিয়ে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলার আবেদন করেন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন। চলতি মাসেই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে হলে আদালত সূত্রে খবর।