ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। (এক্সপ্রেস ছবি)
জলপাইগুড়িতে কালবৈশাখীর তান্ডবলীলা। মৃত্যু হল চার জনের। রবিবার বিকেলে ভয়ঙ্কর কালবৈশাখীর দাপটে লণ্ডভণ্ড জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। ঝড়ের দাপটে কমপক্ষে চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের ময়নাগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
Advertisment
১৫ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। বহু গাছ উপড়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য বাড়ি। জেলাজুড়ে অনেক জায়গাতেই কম-বেশি ঝড়ের তাণ্ডব চললেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জলপাইগুড়ি শহর ও ময়নাগুড়ির বার্নিশ এলাকায়।
প্রবল ঝড়ে মৃত্যু হয়েছে জলপাইগুড়ির বিজেন্দ্র নারায়ণ সরকার (৫২ ) এবং অনিমা রায় (৪৯) এবং ময়নাগুড়ির যোগেন রায় (৭২) এবং সমর রায়ের (৬৪) ৷ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর ঝড়ের তান্ডবে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ময়নাগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঘটনায় এক্স হ্যাণ্ডেলে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Advertisment
এদিকে, বিকেলে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মেখলিগঞ্জ ব্লকের রানিরহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা। চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের খেতাবেচা ও চৌরঙ্গী এলাকাতেও অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। বড় বড় শিল পড়ে অনেক বাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গে আগামী দু-তিনদিন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল আবহাওয়া দপ্তর। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় এদিন বৃষ্টি হয়। বিকেল নাগাদ জলপাইগুড়ি জেলার একাধিক জায়গায় ঝড় শুরু হয়। কিছুক্ষণের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বেশ কিছু এলাকা।
এদিন বিকেল তিনটে নাগাদ প্রবল ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। এর ফলে বেশ কয়েকটি গাছ উপড়ে পড়ে এবং বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনা এড়াতে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
Sad to know that sudden heavy rainfall and stormy winds brought disasters today afternoon in some Jalpaiguri-Mainaguri areas, with loss of human lives, injuries, house damages, uprooting of trees and electricity poles etc.
District and block administration, police, DMG and QRT…
এক্স হ্যান্ডেল ঘটনার জেরে শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “আচমকা ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে আজ বিকেলে কিছু জলপাইগুড়ি-ময়নাগুড়ি এলাকায় বিপর্যয় ডেকে আনে। ঘটনার জেরে প্রাণহানির পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ের ফলে গাছ উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে পড়লে বেশ কয়েক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জেলা ও ব্লক প্রশাসন, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করে চলেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। মৃত ও আহতদের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন নিয়মানুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেবে"।
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, উত্তরবঙ্গে দার্জিলিংয়ের পার্বত্য এলাকায় হালকা তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী দু-তিনদিন এই পরিস্থিতি হতে পারে। মূলত বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় বৃষ্টি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। তুলনায় কম বৃষ্টি হবে জলপাইগুড়ি ও কালিম্পংয়ে। মঙ্গলবার বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ি জেলায়। বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায়।