এখনও জাঁকিয়ে শীত পড়েনি। কিন্তু ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব শুরু হতেই মশার দাপট বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে গত এক সপ্তাহে ভয়াবহ পরিসংখ্যান ডেঙ্গুর। রাজ্যেই এক সপ্তাহে আক্রান্ত ৭৪৭ জন। কলকাতায় সেই সংখ্যাটা ২৭৩ জন। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১,৩৬৪ জন। যা ঘুম কেড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের।
উত্তর ২৪ পরগনায় গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত ২৫৫ জন। জেলায় মোট আক্রান্ত ১,১৬৭ জন। আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কম হাওড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। হাওড়ায় মোট আক্রান্ত ৪০১ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মোট আক্রান্ত ৩০৫ জন। কলকাতা এবং কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। যদিও কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষের দাবি, কলকাতায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। জমা জল নিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।
উত্তরবঙ্গেও মশার দাপট বেড়েছে। শিলিগুড়ি, বাগডোগরা, নকশালবাড়িতে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। জমা জল থেকে বিপদ বাড়ছে, মত এলাকাবাসীদের। ডেঙ্গুর এই সংখ্যাবৃদ্ধি ক্রমেই চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনের। অভিযোগ উঠছে, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হতেই ডেঙ্গু নিয়ে বিশেষ কোনও পদক্ষেপ করছে না প্রশাসন। বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনে যাচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরাও। জমা জল থেকেই ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু।
ডেঙ্গু রুখতে কোনও খামতি রাখতে চাইছে না পুর-প্রশাসন। গত বারের তুলনায় এবার বেড়েছে ডেঙ্গু পরীক্ষার সংখ্যা। সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে ৮৪ হাজার জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে আক্রান্তের হার ছিল ২.৬%। এ বছর এক লক্ষ ৮৬ হাজার মানুষের ডেঙ্গু পরীক্ষা হয়েছে। এ বারে আক্রান্তের হার ১.৬%। শীতের মুখেও কমছে না সংক্রমণ, জেলায় জেলায় ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। ডেঙ্গু ক্রমশ ভয়ঙ্কর রূপ নিতে চলেছে বাংলায়।
আরও পড়ুন ডেঙ্গুর ছোবলে ত্রস্ত বাংলা, লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দেন। উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক সভা থেকে পুর প্রশাসক, বিধায়কদের তিনি নির্দেশ দেন, তাঁরাও যেন নিজেদের এলাকায় বেশি করে মানুষকে সচেতন করেন। জল জমা, আবর্জনা পরিষ্কার নিয়ে খোঁজখবর রাখতে বলেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন