Suvendu Adhikari On Deocha Pachami job scam: দেউচা-পাঁচামিতে চাকরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। সাংসদ সামিরুল ইসলাম এবং জেলা শাসকের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন শুভেন্দু অধিকারী।
দেউচা-পাচামি কয়লা খনি প্রকল্পের চাকরি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিযোগ জেলা শাসক বিধান রায় এবং রাজ্য সভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম দুর্নীতির মূল মাথা। বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত দিন সাতেক আগে রামপুরহাটের অবস্থান মঞ্চে এসে দেউচা-পাঁচামি নিয়ে জেলা শাসক বিধান রায় এবং রাজ্য সভার সাংসদ সামিরুল ইসলামের দুর্নীতি তুলে ধরার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই মতো শনিবার বিকেলে হাজির হন বিজেপির সিউড়ি দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, “আদিবাসীরা প্রকৃতি প্রেমী। জল জমি জঙ্গল আদিবাসীদের সভ্যতার সঙ্গে যুক্ত। সেই প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। আগেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল গাছ কাটা হবে না। স্থানান্তরিত করা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যতগুলি গাছ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁর একটিও বেঁচে নেই। কয়েক বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী কয়লা খনিকে দেখিয়ে শিল্পায়নের নামে সাত আট বছর ধরে ভাওতা দিয়ে বলছেন ১০ লক্ষ বেকারের চাকরি হবে। কেউ বেকার থাকবে না। কোটি কোটি মেট্রিকটন কয়লা উত্তোলন হবে। ২২ টি ব্লক ধরে সরকার টেন্ডার করেছে। তাতে কয়লা উত্তোলনের কথা নেই। পাথর উত্তোলনের কথা বলা হয়েছে। যেটা করে বীরভূম জেলায় তৃণমূলের করে কম্মে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগেও পাথর বালির ব্যবসা করেছে তৃণমূল। এবার নতুনভাবে সরকারি সিলমোহর দিয়ে করা হচ্ছে। ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর নোটিফিকেশন করে সরকার জানিয়ে দিয়েছিল দেউচা-পাঁচামি এলাকায় আর জমি কেনা বেচা হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তারপরও জমি কেনাবেচা করে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। চাকরি পেয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের কয়েকজন। চাকরি দেওয়া হয়েছে সাংসদ সামিরুলের নিকট আত্মীয়দের”।
সাংবাদিকদের হাতে নথি তুলে দিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, “যারা বংশপরম্পরা বসবাস করছেন এমন আদিবাসীদের জমি পাট্টা না দিয়ে এলাকায় বসবাস করেন না এমন কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীকে পাট্টা পাইয়ে দিয়েছেন সামিরুল। সেই কারনে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিস থেকে পাট্টার কাগজ হারিয়ে দেওয়া হল। এনিয়ে থানায় এফ আই আর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও সেটা হয়নি। সামিরুল ক্ষমতা বলে ২৬ জন নিজের আত্মীয় কিংবা কাছের লোকেদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। যারা জমির মালিক নন। সাহিল রেজার বাড়ি বীরভূমের মাড়্গ্রাম থানা এলাকায়। তিনি হোমগার্ডে চাকরি করছেন। তিনি সামিরুলের দাদার ছেলে।
জামাল হোসেন, রবিউল ইসলাম খানদের বাড়ি সাঁইথিয়া। তাঁরা হোমগার্ডে চাকরি করছেন। পরিচয় দুজনের সামিরুল ইসলামের দাদার ছেলে। এরা জমির বিনিময়ে চাকরির তালিকায় পড়েন না। এই দুর্নীতিতে জেলা শাসক এবং সাংসদকে সহযোগিতা করেছেন পি ডি সি এলের সেলিমের”। শুভেন্দু তথ্য দিয়ে বলেন, “এখনও পর্যন্ত ১৬৬২ জনকে জমির বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৭৮ জনকে গ্রুপ ডি পদে। বাকিদের জুনিয়ার কনস্টবল পদে। কিন্তু একটিও স্থায়ী চাকরি নয়। সেকথা জেলা শাসক নিজে বলেছেন। সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সামিরুল ইসলাম বলেন, “শুভেন্দু ক্ষেপে গিয়েছে। পি ডি ডি এল তাদের কিছু অস্থায়ী লোক নিয়োগ করেছে। সেগুলোকে আমাদের বলে শুভেন্দু চালাচ্ছে। আসলে কয়লা খনি মসৃণভাবে চলছে। সেটা সহ্য হচ্ছে না বিজেপির। প্রয়োজনে ওরা আদালতে যেতে পারে”।