ফের সমস্যার মুখে 'দিদির দূত'। এবার গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় তিনি ছিলেন বিজেপিতে। বিজেপির হয়ে জয়ী হওয়ার বেশ কিছুদিন পর প্রত্যাবর্তন করেছিলেন তৃণমূলে। এবার সেই বিশ্বজিৎ দাসই তৃণমূলের কর্মসূচি অনুযায়ী 'দিদির দূত' হিসেবে সোমবার বাগদার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন। গ্রামবাসীরা তাঁকে কাছে পেয়েই ক্ষোভ উগরে দেন। এক বয়স্ক গ্রামবাসী বিধায়ককে বলেন, 'আপনি তো দলই বদলে ফেললেন, আপনাকে সমস্যার কথা জানিয়ে আর কী হবে?'
এসব শুনেই বিধায়কের সঙ্গে থাকা তৃণমূল কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁরা ওই ব্যক্তিকে উচ্চস্বরে কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন। এই সময় বিধায়ক তাঁদের শান্ত করেন। তিনি পালটা ওই বয়স্ক ব্যক্তিকে বলেন, 'আপনার কোনও সমস্যা থাকলে বলুন না। আমি তো শুনতেই এসেছি।' পালটা ওই ব্যক্তি বলেন, 'এখানে প্রচুর সমস্যা আছে।' শুনে বিধায়ক পালটা বলেন, 'আপনি সবার হয়ে বলছেন নাকি? নিজের সমস্যা থাকলে বলুন।' পরে বিশ্বজিৎ দাস বলেন, 'এলাকার কিছু সমস্যার কথা বলেছেন। সেগুলো দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। সেই নিয়েই খোঁজখবর করতে এসেছিলাম।'
'দিদির দূত' নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতি সরগরম। রবিবারই বীরভূমের মুরারইয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে দলীয় মিছিলে হাঁটতে দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিধায়ক স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা না-বলেই এলাকা দিয়ে গাড়ি চেপে চলে গিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে আবার স্থানীয় বিজেপি কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে 'দিদির দূত'-এর বিরুদ্ধে। এই ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় 'দিদির দূত'রা ক্ষোভের মুখে পড়ায় বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'অনেক জায়গায় সাজিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে।' সোমবার সাগরদিঘিতে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীর কাছে আবেদনের সুরে বলেন, 'কোনও সমস্যা থাকলে অবশ্যই মেটানোর ব্যবস্থা করা হবে। শুধু কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না।'
আরও পড়ুন- গ্রামে গ্রামে দিদির দূতেরা ক্ষোভের মুখে, ঢিলে সুরক্ষাকবচ, বিড়ম্বনাতেই পঞ্চায়েত কৌশল লুকিয়ে তৃণমূলের
'দিদির দূত' কর্মসূচিতে দলীয় জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ নিচ্ছেন, এলাকার কী কী কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। কী ধরনের উন্নয়ন করা বাকি, সেই সম্পর্কেও 'দিদির দূত'রা খোঁজ নিচ্ছেন। কিন্তু, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বেশ ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করছেন, তাদের এলাকার বহু কাজই বাকি। রাস্তা নেই, কোথাও পানীয় জলের সমস্যা আছে। কোথাও আবার নিকাশি এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্যা। তাঁদের অভিযোগ, এতদিন এই সব ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কোনও খোঁজই নেননি। এখন পঞ্চায়েত ভোট। তার জন্য খোঁজখবর নিতে এসেছেন।