পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে গত কয়েকদিনে হিংসায় ছিন্নভিন্ন ভাঙড়। সেই ভাঙড়েই শুক্রবার গিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। হিংসাদীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। কেন এই সন্ত্রাস, বোমা, গুলি, মানুষের প্রাণহানি? তা নিয়েই রাজ্যপাল কথা বলেন ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও-র সঙ্গে। রাজ্যপালের এই উদ্যোগে খুশি বিরোধী দলগুলোর একাংশ। সরাসরি রাজ্যপালকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'উনি (রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস) এসেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকার বার্তা দিয়েছেন। যেখানে দুর্ঘটনা বা গোলমাল, সেখানে ছুটে গেছেন। বাসন্তী গিয়ে করোমন্ডল পীড়িতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। উনি খুব সেনসিটিভ। এটা দরকার আছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিজে দেখেন। রাজ্যের মানুষ কিরকম আছে, নিজে দেখতে যান। উনি অত্যন্ত এক্টিভ। রাজ্যের মানুষ বিপদে পড়লে অন্ততঃ এই একটা লোককে পাশে পাবে।'
আরও পড়ুন- ‘শওকত মোল্লা কে?’ সন্ত্রাস-বিধ্বস্ত ভাঙড়ে গিয়ে প্রশ্ন রাজ্যপালের
বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। উত্তাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন তৃণমূল নয়, আইএসএফয়ের উস্তানিতেই এই হত্যাকাণ্ডা। এরপর গতকালই রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, কোনও অবস্থাতেই এই হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। আনন্দ বোস জানান, ভোটের আগেই হিংসার ঘটনায় রাজ্যে মৃতের সংখ্যা দেখে তিনি হতবাক। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, 'আমি পদক্ষেপ করলে তা অত্যন্ত কড়া পদক্ষেপ হবে।'
পরে রাতে বিবৃতি জারি করে রাজ্যপাল বলেন, 'গণতন্ত্রে জনগণই সব। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে হিংসার কোনও স্থান নেই। ভোটের সংখ্যার ওপর নির্ভর করে নির্বাচনে জয় নির্ধারণ করা হয়, মৃতের সংখ্যায় না। তবে এখানে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভও আক্রান্ত। এর অর্থ গণতন্ত্র আক্রমণের মুখে, এর মানে সংবিধান, নতুন প্রজন্ম আক্রমণের মুখে। শয়তানের এই খেলা এবার শেষ হওয়া উচিত, শেষ হবে। পশ্চিমবঙ্গে শেষের শুরু হবে।'
রাজ্যপালের এই কড়া কথা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমরাও উদ্বিগ্ন। পশ্চিমবঙ্গর ইমেজের পক্ষে এগুলো ভালো নয়। উনি বলছেন। বাকি তো কেউ বলেও না। আমরা আশা করব, তার হাত দিয়ে এগুলো সমাধান হবে।'