দারিদ্রতাকে হারিয়েই ফুটবল জাগলিং-এ ‘বিশ্বরেকর্ড’কেই পাখির চোখ করেছেন হুগলির দীপক। ফুটবল মাথায় নিয়ে সাইকেলে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে গড়েছেন রেকর্ড। পাশাপাশি বোতলের মাথায় ফুটবল নিয়ে ৫৮ মিনিটের সাইকেল চালানোর রেকর্ডও রয়েছে দীপকের। এছাড়াও ফুটবল মাথায় নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সাঁতার কাটতেও দক্ষ তিনি। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম তুলেছেন। আগামীর লক্ষ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়া। সেই লক্ষ্যেই চলছে কঠোর পরিশ্রম। বছর ৪৩-এর দীপকের তাক লাগানো প্রতিভা আপনাকে অবাক করতে বাধ্য।
ফ্রিস্টাইল ফুটবলের আন্তর্জাতিক মঞ্চে নাম খোদাই করার স্বপ্নে মরিয়া হুগলির ৪৩ বছর বয়সি দীপক রায়। পেশায় তিনি একজন পাম্প অপারেটর। আর ফুটবল তাঁর কাছে একটা নেশার মত। বাড়ি থেকে ২০ কিলোমিটার দুরেও এক ডাকে সকলেই চেনেন এই 'প্রতিভাবান চ্যাম্পিয়ন'কে। ক্রমাগত কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে ফুটবল জাগলিংয়ে তাঁর জুড়ে মেলা ভার। তিন বার জিতেছেন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের শিরোপা। এবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়তে মরিয়া তিনি।
বাড়িতে বৃদ্ধা মা আর দীপকের ছোট সংসার। ছোট থেকেই ফুটবলের প্রতি অদম্য ভালবাসা। কিন্তু এভাবে যে ফুটবল তাকে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে দেবে তা কখনও ভাবেন নি তিনি। হুগলির মন্ডলবাগানের বাসিন্দা ফুটবল খেলার পাশাপাশি জিমন্যাস্টিকে ভর্তি হন। ফুটবল আর জিমন্যাস্টিকের মেলবন্ধনে তিনি হয়ে ওঠেন এক কথায় অদ্বিতীয়। বর্তমানে ছোটদের জিমন্যাস্টিকের প্রশিক্ষণও দেন দীপক। সরকারের কাছে বিশ্বরেকর্ড গড়ার জন্য আর্থিক সাহায্য’র জন্যও তিনি ইতিমধ্যেই আবেদনও করেছেন। ফ্রিস্টাইল ফুটবলের প্রতি তার আবেগকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে চান তিনি।
দীপক বলেন, প্রথম দিকে আমি ফুটবল খেলতাম। পরে ভাবলাম এমন কিছু করি যা মানুষকে আকৃষ্ট করবে সেই থেকেই জাগলিং শুরু করি। আমি সফল হয়েছি। আমি এটা করতে ভালবাসি। নিজেকে সেরার সেরা প্রমাণ করতে বিশ্বরেকর্ড গড়ার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম তুলেছি। এবার লক্ষ্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।
২০২০ সালেই প্রথম ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের স্বীকৃতি মেলে। মাথায় ফুটবল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে নজির গড়েন তিনি। সেই সময় তিনি সাইকেলের হ্যান্ডেল না ধরেই দীর্ঘপথ মাথায় ফুটবল নিয়ে পাড়ি দেন। যা তাঁকে এনে দেয় সেরার সেরার খেতাব। এতে ক্ষান্ত হন নি তিনি। ২০২১ সালে ৫৮ মিনিট একটি বোতলের ওপর ফুটবল রেখে তাক লাগানো ভারসাম্যে রেকর্ড গড়েন। সম্প্রতি তিনি মাথায় ফুটবল নিয়ে ২ঘন্টা ৪০ মিনিট সাঁতার কেটে ফের জিতে নেন সেরার সেরা খ্যাতি।
দীপকের কথায়, ‘আমি মূলত ফুটবল জাগলিং ছাড়াও ফায়ার জাগলিং, এছাড়াও ছোট ছোট নানান ধরণের জাগলিং যেমন টেনিস বল নিয়ে জাগলিং করি। তবে ফুটবল জাগলিং আমার প্রিয়’। জাগলিংয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ার অপেক্ষায় তিনি তার এই অনুশীলন চালিয়ে যেতে চান। সেজন্য তিনি আর্থিক সাহায্য’রও আবেদন করেছেন। দীপক আত্মবিশ্বাসী, দক্ষতা ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে তিনি একদিন বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পাবেন।