Party Change: লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপি শিবিরে বড় ধাক্কা দিল তৃণমূল। গাজোলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা দলের জেলা সহ-সভাপতি দিপালী বিশ্বাস সদলবলে যোগদান করলেন তৃণমূলে। মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূলের একটি নির্বাচনী সভার মধ্য দিয়েই গাজোলের ওই বিজেপি নেত্রী প্রায় ১০০ জন কর্মী সমর্থককে সামিল করে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। আর এই ঘটনার পরেই মালদার রাজনীতিতে তুমুল শোড়গোল পড়ে গিয়েছে।
বিজেপির একটি সূত্রের খবর, দলীয় নেত্রী যে সদলবলে তৃণমূলে যোগদান করবেন, সেই সম্পর্কে তাদের কিছুই জানা ছিল না। এদিন হঠাৎই তৃণমূলের নির্বাচনী সভা মঞ্চেই ১০০ জনেরও বেশি কর্মী , সমর্থক নিয়ে প্রাক্তন বিধায়িকা দিপালী বিশ্বাস তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন উত্তর মালদার লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল দলের প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জি। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি, রাজ্য তৃণমূলের উদ্বাস্তু সেলের চেয়ারম্যান রঞ্জিত সরকার, মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্য সাগরিকা সরকার সহ দলের জেলা নেতৃত্ব ।
আর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই সভামঞ্চে মাইক হাতেই নেত্রী দিপালী বিশ্বাস বলেন, 'বড় ভুল করেছিলাম। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে আমাকে দলে নিয়েছে আমি তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। বিজেপির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি প্ররোচনায় যাতে আর কেউ পা না দেয়, সে কথাই জোর গলায় বলছি।'
পুরনো দলে যোগ দিয়েই গাজোল ব্লকের কদুবাড়ী মোড়ে তৃণমূলর একটি নির্বাচনী সভায় যোগ দেন দিপালী। সেখানে উত্তর মালদার লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে জেলার প্রথম সারির নেতা-নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপরই আচমকায় গাজোলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেত্রী দিপালী বিশ্বাস সদলবলে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। আর এতেই অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- Mausam Noor: বিরাট ধাক্কা! স্বপ্নভঙ্গ তৃণমূল সাংসদ মৌসম নূরের, দিলেন পরবর্তী পথের দিশা
এদিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে গাজোল শহরের একটি র্যালি করা হয়। এরপরই অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনী জনসভা। প্রকাশ্য সভায় প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেত্রীর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জি সহ জেলা নেতৃত্ব।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, 'অনেকেই হয়তো বিজেপির প্ররোচনায় পড়ে দল ছেড়েছিলেন। এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তারা তৃণমূলে ফিরে আসছেন। যারা দলে ফিরছেন তাদেরকে অবশ্যই স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আমরা বলে দিতে চাই বিজেপির মিথ্যা প্ররোচনায় পা দেবেন না। ওরা কিছু করতে পারবে না। ওটা ভাওতাবাজির একটি দল। এদিন গাজোলের প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাকে আমরা দলীয় ঝান্ডা তুলে দিয়ে স্বাগত জানিয়েছি।'
দলত্যাগী বিজেপি নেত্রী দিপালী বিশ্বাস বলেন, 'গত বিধানসভায় তৃণমূল ছেড়ে আমি বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম। সেটা আমার অনেক বড় ভুল ছিল। আসলে আমার রক্তে তৃণমূল রয়েছে। বিজেপির প্ররোচনায় পা দিয়ে কি করে যে ভুল করে ফেললাম কে জানে। তবে আমি চির কৃতজ্ঞ আমাকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলে ফেরার মতো জায়গা করে দিয়েছেন। আমার মত যাতে আর কেউ ভুল না করে, সে কথাই সভামঞ্চ থেকে বলতে চাই। কারণ, তৃণমূল হচ্ছে উন্নয়নের দল। আর বিজেপি হচ্ছে ভাঁওতাবাজির দল। ওদের প্ররোচনায় কেউ যাতে পা না দেয় সেই আবেদন এই মঞ্চ থেকে জানাচ্ছি।'
এদিকে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ীর কথায়, 'এরা ক্ষমতার লোভী। আজ তৃণমূল, তো কাল অন্য দল, তারপর দিন আবার একটা দল । নিজেদের স্বার্থের জন্য এরা বারবার দল বদলায়। এরকম ভাবে রাজনীতি করে সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো যায় না। উনি কোন দল করবেন কোথায় থাকবেন সেটা ওনার ব্যাপার। কিন্তু বিজেপি আদর্শ নৈতিকতা মেনে চলে। নিজের সুবিধার জন্য দিপালী বিশ্বাস তৃণমূলে যোগদান করেছেন।