Lok Sabha Elections 2024: পরনে ঘিয়ে রঙা সুতির শাড়ি, সঙ্গে রঙিন কলমকারী ব্লাউজ, কপালে ছোট্ট লাল টিপ, মুখে হালকা প্রসাধন। গলায় লাল উত্তরীয়। সঙ্গে একটি সানগ্লাস। হাসিমুখে জানান, সেটি বহুমূল্য নয়। এসপ্ল্যানেডের ফুটপাত থেকে কেনা। শ্যামলা রঙের মেয়েটি এসেছেন শ্রীরামপুর লোকসভা থেকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে। সৌজন্যে ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিষ্ট পার্টি। এবারে সিপিআইএম থেকে একঝাঁক নবীন প্রতিভাবানকে লোকসভার প্রার্থী করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম দীপ্সিতা ধর।
ছাত্র রাজনীতিতে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এক পরিচিত মুখ। সুবক্তা, পড়াশোনায় তুখোড় এই নেত্রী এবার শ্রীরামপুরে লড়ছেন কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়ের মতো শাসকদলের ডাকাবুকো নেতার বিরুদ্ধে। যিনি তিনবারের সাংসদ। প্রাক্তন বিধায়ক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ, যুবনেতা তীর্থঙ্কর রায়কে নিয়ে চুঁচুড়াতে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) কুহক ভূষণের কাছে এদিন তিনি মনোনয়ন জমা দেন। বাইরে তখন অপেক্ষা করছেন দীপ্সিতার বাবা, মা ও গুটিকয়েক কর্মী। একদিকে জাঁকজমক অন্যদিকে ততটাই আড়ম্বরহীন।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি বিশেষ করে শাসকদল তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী বিজেপি যখন ঢাকঢোল পিটিয়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে মহামিছিল করে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাচ্ছে অন্যদিকে তখন সিপিএমের থ্রি মাস্কেটিয়ার্স গুটিকয়েক অনুগামী নিয়ে শান্ত ভাবে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিলেন। হুগলি জেলায় তিনটি লোকসভা আসন। হুগলি, শ্রীরামপুর এবং আরামবাগ। এদিন তিনটি আসনেই তিন যুবক-যুবতী একসঙ্গে একজায়গায় জমায়েত হয়ে মনোনয়ন জমা দিলেন। হুগলি থেকে যুবনেতা মনোদীপ ঘোষ, শ্রীরামপুর থেকে দীপ্সিতা ধর এবং আরামবাগ থেকে তরুণ তুর্কি নেতা বিপ্লব মৈত্র।
স্বচ্ছ ভাবমূর্তির এই তিন যুবক যুবতীর বিরুদ্ধে কোথাও কোনও অভিযোগ নেই। বলা যায়, এই থ্রি মাস্কেটিয়ার্সকে ভোটযুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছে বামেরা। সোমবার এবং মঙ্গলবার ভিন রাজ্যের দুই মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এসে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বিজেপির দুই প্রার্থী। শোভাযাত্রার জাঁকজমক বাড়াতে দুই দলই কোন ত্রুটি রাখেননি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে গুটিকয়েক লালঝান্ডা সম্বলিত একনিষ্ঠ কর্মী নিয়েই মনোনয়ন পর্ব সেরে নিলেন কমিউনিস্টরা।
'সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে আমাদের ফল অনেক ভালো হবে। প্রশাসনকে সেই অনুরোধ আমরা জানিয়েছি। আমরা চাই নির্বাচনে শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, রাজনৈতিক উপাদানগুলি ফিরে আসুক', জানান দীপ্সিতা ধর। তাঁর কথায়, 'হক রুটি, রুজি, জনতাই পুঁজি। এটাই আমাদের ক্যাচলাইন।'