scorecardresearch

সরকারি তালিকা মানছেন না সভাপতি, কালনায় আটকে আমফানের ক্ষতিপূরণ

ওই তালিকার নাম বাদ দেওয়ার আবেদন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর কাজিয়াও শুরু হয়েছে।

amphan

আমফান ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে যখন উত্তাল বাংলা, তখন তালিকা তৈরি হলেও ক্ষতিগ্রস্তরা জানেন না কবে জুটবে ক্ষতিপূরণ। আমফান ঝড়ে ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। তালিকায় সভাপতি সই না করায় কালনা ২ নম্বর ব্লকে আটকে গিয়েছে উপভোক্তাদের ত্রাণের টাকা। ওই তালিকার নাম বাদ দেওয়ার আবেদন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর কাজিয়াও শুরু হয়েছে।

প্রশাসনের এনকোয়ারির তালিকা মানতে পারছেন না কালনা ২ নম্বর পঞ্চায়তে সমিতির সভাপতি নীলিমা কপ্টী। এদিকে পিন্ডিরা গ্রামপঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান মন্টু ঘোষালের দাবি, সমিতির সভাপতি ওই তালিকা থেকে যাঁদের বাদ দিতে চাইছেন তাঁরা গরিব মানুষ। টাকা পাওয়ার যোগ্য। পাশের হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়া, পান্ডুয়া এলাকায় বিভিন্ন পঞ্চায়েতের ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণের টাকা পেয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে উপভোক্তাদের।

আরও পড়ুন- তৃণমূলে তোলপাড়, অরূপের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ রাজীবের

আমফান ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নানা অভিযোগে জর্জরিত তৃণমূল কংগ্রেস। কোথাও পাকা বাড়ির মালিক ত্রাণের টাকা নিয়েছেন, আবার কোথাও গরিব মানুষ ক্ষতিপূরণ পাননি। কালনা ২ নম্বর ব্লকে ১০৫ জনের ক্ষতিপূরণের তালিকা প্রস্তুত হলেও সেই তালিকায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নীলিমা কপ্টী স্বাক্ষর করেননি। প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর স্বাক্ষর ছাড়াই ওই তালিকা ট্রেজারিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন- আমফান ত্রাণ দুর্নীতিতে এবার হাওড়ায় ৩ তৃণমূল নেতা সাসপেন্ড

ক্ষতিপূরণের তালিকা থেকে ১৫ জনের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেছেন কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নীলিমা কপ্টী। এই খবর ছড়াতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন পিন্ডিরা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূল নেতা মন্টু ঘোষাল। তাঁর স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য। মন্টু ঘোষালের দাবি, তাঁকে দল পিন্ডিরা গ্রামপঞ্চায়েত দেখাশোনা করার জন্য চেয়ারম্যান করেছেন। মন্টুবাবু বলেন, “সমিতির সভাপতি এই নাম বাদ দেওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। আমার কাছে তাঁরা অভিযোগ করেছেন। আমি বলেছি নীলিমা কপ্টী যখন এনকোয়ারি করিয়েছে আমি কী বলব। কিছু লোক ত্রাণ পাওয়ার মতো আছেন। এরা বড়লোক নয়, অবস্থাপন্ন নয়। প্রধানের গ্রামের দুজনের নাম বাদ দিয়েছে। প্রধানও বলেছেন এরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য।”

আরও পড়ুন- মুকুল-বাবুলের রিপোর্ট কার্ডে রাজ্য ডাহা ফেল, পাল্টা আক্রমণ তৃণমূলের

নীলিমা কপ্টী জানিয়েছেন, তিনি তালিকার ১৫ জনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। মহকুমাশাসকের কাছে ওই নাম বাদ দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেছেন। নীলিমাদেবী বলেন, “বিডিও তাঁদের কর্মীদের দিয়ে এনকোয়ারি করেছেন। আমি কমিটিতে থাকা সত্বেও আমাকে জানানো হয়নি। তাই আমি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে ফের নিজে এনকোয়ারি করি। আমাকে না জানিয়ে ঠিক করেননি বিডিও। আমাকে যখন তালিকায় সই করতে দিয়েছে, আমি স্বাক্ষর করিনি। আমি বলেছি আমাকে এনকোয়ারির বিষয়ে কিছু জানাননি। আমি এনকোয়ারি করে তবে সই করব। এনকোয়ারি করে ওই তাালিকা জমা দিয়েছি।”

আরও পড়ুন- প্রশান্ত কিশোরের “দিদিকে বলো” কে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে “বাপ কে বলো”

“প্রশাসনিক নিয়ম মেনে এনকোয়ারি হয়েছে। এনকোয়ারি তো আফিসাররা করে, আমি জানি না জনপ্রতিনিধি করে কী না,” বলছেন বিডিও। কালনা ২-এর বিডিও মিলন দেবঘড়িয়া বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তালিকা এসেছে। প্রথমে ৭৭৫ জনের পুরো ক্ষতি হয়েছে বলে রিপোর্ট করেছিল। পরে যখন তালিকা চাই তখন আমরা ছবি সহ ১৮৬ জনের তালিকা পাই। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী আমরা এনকোয়ারি করতে পাঠিয়েছিলাম। সভাপতির কী আইডিয়া আছে তা-ও জানি না। পুলিশকেও লিস্ট শেয়ার করি এনকোয়ারিকরার জন্য। ওই ১৮৬ জনের লিস্টে সইও করেছিলেন সভাপতি। পুলিশ ও আমাদের অফিসারদের রিপোর্ট প্রায় একই এসেছে। ১০৫ জনের তালিকা তৈরি হয়েছে।”

আরও পড়ুন- ‘সিপিএম আমলে ১০০ শতাংশ চুরি হত, এখন ৯০ শতাংশ কমেছে’

ওই তালিকার ১৫ জনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে সভাপতি। আপত্তির তালিকা দিয়েছেন এসডিও-র কাছে। জানা গিয়েছে, এসডিও অফিসও জানিয়ে দিয়েছে এরা ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য। বিডিও বলেন, “১০৫ জনের তালিকায় ফর্ম বি-তে সমিতির সভাপতি সই করেননি। এটা এসডিওকে জানিয়েছি। ফর্ম বি-তে সভাপতি সই না করলে ট্রেজারি টাকা ছাড়বে না। প্রয়োজনে জেসাশাসক, এসডিও এবং বিডিও সই করা তালিকা ট্রেজারিতে যাবে।”

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Dispute over amphan relief list in east burdwan kalna 2 bdo panchayat samiti tmc