নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুক্রবার বিচারব্যবস্থার একাংশের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ ইস্যুতে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে। ২৪ ঘন্টা আগে করা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য আদতে দেশের সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি 'অবমাননাকর' বলে দাবি করেছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। অবিলম্বে অভিষেকের সাংসদ পদ খারিজের আর্জি জানি বিজেপি সাংসদ লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে চাঁর চিঠির প্রতিলিপি দিয়ে সাংসদ সৌমিত্র লিখেছন, 'সাংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত। যেভাবে অভিষেক ব্যানার্জী মাননীয় হাইকোর্টের বিচারপতি ও বিচারব্যাবস্থা কে নিয়ে মন্তব্য করেছেন, এটা আমাদের বিচার বিভাগ বা আমাদের সংবিধানের অপমান। শ্রদ্ধেয় লোকসভার স্পিকার শ্রী ওম বিড়লাকে জী মহোদয় কে এই মর্মে একটি চিঠি প্রদান করলাম
এটার সঠিক পদক্ষেপের জন্য।'
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, 'সংবিধান অনুযায়ী বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমরা যেতে পারি না। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ যে মন্তব্য করেছেন, তা বিচারব্যবস্থা তথা সংবিধানের অপমান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ পদ খারিজ করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।'
কী বলেছিলেন অভিষেক?
শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামে আহত তৃণমূল কর্মীদের দেখতে এসএসকেএমে যান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সেখান থেকে বেরিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রমণ শানান কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচাপতিকে। অভিষেক বলেন, ‘যাদের জেলে থাকার কথা, তাদেরকে সুরক্ষা দিয়ে পুলিশের হাত, পা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতি যেভাবে একটা রাজনৈতিক দলকে মদত দিচ্ছেন, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। স্বাধীনতার পর এমন ঘটনা ঘটেনি।’
এরপরই সরাসরি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নাম বলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক বলেন, ‘বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এমন নির্দেশ দিচ্ছেন যে, শুভেন্দু আগামীদিনে কোনও অপকর্ম করলেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। শুভেন্দু একা নন, পবিত্র কর, মেঘনাথ পাল, অশোক করণ- নন্দীগ্রামে অশান্তি সৃষ্টিকারী প্রত্যেকের আগাম জামিনের সুরক্ষা দিয়ে রেখেছেন এই বিচারপতি।’
আরও পড়ুন- কতদিনে ‘লড়াই’ থামাবেন তিনি? চর্চা তুঙ্গে তুলে বলেই দিলেন শুভেন্দু!
বিজেপির সঙ্গে বিচারপতি মান্থার যোগাযোগ নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘বিজেপির প্রতি এই বিচারপতির কি বাধ্যবাধকতা? কেন বেছে বেছে বিজেপির নেতাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করছেন তিনি?’
এর জন্যে যদি তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়? এ প্রসঙ্গে অভিষেকের জবাব ছিল, ‘আমি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলব। আজ বলতে বাধ্য হলাম। কারণ, শুধুমাত্র একজন বিচারপতির জন্য সমগ্র বিচারব্যবস্থা কলুষিত হচ্ছে। সত্যি কথা বলার জন্য আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তিনি নিতেই পারেন।’