''বিধায়করা চাকরির জন্য লেটারহেডে সুপারিশ করবেন না। মুখে কথা বলুন, ফোনেও সব বলবেন না।'' বিতর্ক এড়াতে দলীয় বিধায়কদের স্পষ্ট বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের সাংগঠনিক সভায় এভাবেই দলের সবস্তরের নেতাদের সতর্ক করতে একগুচ্ছ পাঠ তৃণমূলনেত্রীর।
এসএসসি-তে শিক্ষক নিয়োগ, এসএসসি গ্রুপ-ডি, প্রাইমারি টেটে নিয়োগ নিয়েও দুর্নীতির পাহাড় প্রমাণ অভিযোগ সামনে এসেছে। কোটি-কোটি টাকার বিনিময়ে বঙ্গে চাকরি বিক্রির অভিযোগে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। চাকরি বিক্রির এই চক্রের অন্যতম প্রধান 'পান্ডা' হয়ে বর্তমানে গারদের পিছনে দিন কাটাচ্ছেন একদা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শাসকদলের একাধিক নেতাও এই দুর্নীতিতে আষ্ঠেপৃষ্টে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এবার অত্যন্ত সাবধানী তৃণমূল কংগ্রেস।
বৃস্পতিবার কলকাতায় দলের সাংগঠনিক সভাতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে সেই 'সাবধান-বাণী'। দলের বিধায়কদের এবার আরও বেশি সতর্ক থাকার পাঠ তৃণমূলনেত্রীর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ''মুখে কথা বলুন, ফোনেও সব বলবেন না। জেলায়-জেলায় আইবি-র লোকেরা বিজেপির। লেটারহেডে কখনও চাকরির জন্য সুপারিশ করবেন না। হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজও তুলে রাখা যায়। এখনই সাবধান হোন।''
আরও পড়ুন- ‘বীরের সম্মান দিয়ে ফেরাবেন কেষ্টকে’, দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ মমতার
এরপরেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে নয়া স্লোগান তোলার আহ্বান তৃণমূলনেত্রীর। 'এজেন্সি চাই না, চাকরি চাই'। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলকর্মীদের এই স্লোগান নিয়ে সোচ্চার হওয়ার ডাক দলনেত্রীর। তাঁর দল কর্মসংস্থান চায়, বিরোধীরা তা চায় না বলেই দাবি তৃণমূল সুপ্রিমোর।
এদিকে, এদিন ফের একবার জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম এদিনের সভাতেও একবারের জন্যও মুখে আনেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে এদিন ফের একবার কেষ্টর হয়ে ব্যাট ধরতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলনেত্রীকে।
আরও পড়ুন- ‘মমতা-অভিষেক বিরোধ নেই, হওয়ারও নয়’, কর্মী-সম্মেলনে বড় বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমোর
তিনি বলেন, ''কেষ্ট বেচারা ওঁর নিজেরই শরীর খারাপ। প্রতি ভোটে ওঁকে নজরবন্দি করে রেখে দেয়। ভাবছেন জেলে বন্দি করে রেখে পার্মালমেন্টের সিট দখল করবেন। ও গুড়ে বালি। যতদিন কেষ্ট ফিরে না আসছে লড়াই আরও তিন গুণ বাড়বে। বীরের সম্মান দিয়ে ওকে জেল থেকে বের করে আনবেন। এর জন্য তৈরি থাকুন। বীরভূম হারতে শেখেনি, হারতে জানে না।''