Advertisment

Premium: মিড-ডে মিলে ড্রাগন ফল! পড়ুয়াদের পুষ্টির প্রতি নজরদারিতে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলের নজির সৃষ্টি

Madarnagar Primary School: শতাধিক গাছে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Raina, Madarnagar Primary School, রায়না, মাদারনগর প্রাথমিক স্কুল,

Raina-Madarnagar Primary School: এই সেই স্কুল। (নিজস্ব চিত্র)

Dragon Fruit at Mid Day Meal East Burdwan School: খুদে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলে পুষ্টির জোগান দিতে বিদ্যালয়ের ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ করে তাক লাগানো কীর্তি গড়ল পূর্ব বর্ধমানের রায়নার মাদারনগর প্রাথমিক স্কুল। এই স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের যৌথ প্রয়াসে এই কীর্তি গড়া সম্ভব হয়েছে।

Advertisment

মিড-ডে মিলের খাবারের মান নিয়ে মাঝে মধ্যেই অশান্ত হয়ে ওঠে এই বঙ্গের কোনও না কোনও স্কুল। তারই মধ্যে যেন ব্যতিক্রম- পূর্ব বর্ধমানের রায়নার মাদানগর প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলের পড়ুয়াদের পুষ্টি লাভের জন্যে মিড-ডে মিলের খাবারের সঙ্গে দেওয়া হয় স্কুল ঘরের ছাদে চাষ করা 'ড্রাগন ফল'। পুষ্টিগুণে ভরপুর 'ড্রাগন ফল' মিড-ডে মিলের পাতে পড়ায় বেজায় খুশি এই বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সন্তুষ্ট অভিভাবকরাও। তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রসংসাও করেছেন। একই কারণে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরও
তারিফ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের চেষ্টার।

Primary School Children, Dragon Fruit, প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা, ড্রাগন ফল,
Primary School Children-Dragon Fruit: ছাদেই ফলানো হয়েছে ড্রাগন ফল। (নিজস্ব চিত্র)

রায়না ১ ব্লকের শ্যামসুন্দর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রত্যন্ত গ্রাম মাদানগর। এই গ্রামেই রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। প্রত্যন্ত গ্রাম হলে হবে কী! স্বাধীনতা লাভের অনেক আগে, ১৯২৩ সালে এই গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের ১৮৯ জন পড়ুয়াকে পাঠদানের জন্যে রয়েছেন ৫ জন শিক্ষক। বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেণিকক্ষ, অফিস ঘর সবই পাকা। শ্রেণিকক্ষ ও অফিস ঘরের মাথার ওপর রয়েছে ঢালাই ছাদ। শুধু বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিল রান্নার ঘরের চালা অ্যাসবেস্টসের। বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বেশিরভাগ অভিভাবকই কৃষিজীবী। তাঁরা মূলত ধান, আলু ও সবজির চাষ করে থাকেন।

তবে এমন এক কৃষিপ্রধান গ্রামের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জমিতে নয়, বরং তাঁদের পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয় গৃহের ছাদে 'ড্রাগন ফল' চাষ করছেন। প্রায় দুই-আড়াই বছর হল এই স্কুলের ছাদে চলছে 'ড্রাগন ফল' চাষ। ২০২৩ সাল থেকে এখানকার ড্রাগন গাছে মূল্যবান ফলও বেশ ভালোই ফলছে। পাশাপাশি বিদ্যালয় ভবনের লাগোয়া ফাঁকা জায়গার মাটিতে মিড-ডে মিলের জন্যে কিছু সবজিরও চাষ হচ্ছে। সেই সবজি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিড-ডে মিলের খাবার। সঙ্গে থাকছে পুষ্টিদায়ক ড্রাগন ফল। যে খেয়ে পড়ুয়ারাও আহ্লাদিত। স্কুলের মধ্যে এমন চাষাবাদ এলাকার কৃষকদেরকেও অবাক করে দিয়েছে।

Mid day meal, Raina School, মিড ডে মিল, রায়না স্কুল,
Mid day meal-Raina School: স্কুলে মিড ডি মিল খেতে বসেছে পড়ুয়ারা। (নিজস্ব চিত্র)

শিক্ষকদের বিদ্যালয় ভবনের ছাদে 'ড্রাগন ফল' চাষ করার ভাবনা প্রসঙ্গে এখানকার প্রধান শিক্ষক কল্যাণময় দাঁ বলেন, 'ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ অন্যান্য ফলের থেকে অনেক বেশি। এই ফলে প্রচুর 'ভিটামিন সি' আছে। এছাড়াও আছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম, ওমেগা
ফ্যাটি অ্যাসিড, বিটা-ক্যারোটিন ও লাইকোপেনের মতো অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। আরও আছে ফাইবার ও আয়রন। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। ক্যালোরি কম থাকায় ড্রাগন ফল খেলে ওজন বাড়ার কোনো সম্ভাবনাও থাকে না। পুষ্টির জন্যে মিড-ডে মিলে ড্রাগন ফল খাওয়ানোর ভাবনা তাই সত্যিই অভিনব। আমরা মনে করি, এভাবে স্কুলে ড্রাগন ফলের চাষ করা হলে স্কুলই আর্থিকভাবে লাভবান হবে। আপাতত বিশেষ ব্যবস্থায় এখানে শতাধিক ড্রাগন ফলের গাছ লাগানো হয়েছে।'

বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক পীযূষ দাঁ জানিয়েছেন, ড্রাগন ফলের চাষ করার জন্যে তাঁরা কোথাও কোনও প্রশিক্ষণ নেননি। তাঁরা ইউটিউব থেকে (YOUTUBE ) ড্রাগন ফলের চাষ পদ্ধতি দেখে ও জেনে নিয়ে বিদ্যালয়ের ছাদে চাষ শুরু করেন। বিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং সকল শিক্ষকরা মিলে এখন চাষের গোটা বিষয়টি তদারকি করছে। ড্রাগন ফলও ভালো ফলছে। আপাতত বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের পাতে খাদ্যগুণে সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ছাদে চাষ করা ড্রাগন ফলের সংখ্যা বেশি হলে, তা বিক্রি করে স্কুলের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলেও শিক্ষক পীযূষ দাঁ জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন- কমিশন-ফোর্সের উপরেও ভরসা নেই বিজেপির! ভবিষ্যতে কাদের দায়িত্বে ভোট?

বিষয়টি জানতে পেরে ওই স্কুলের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের চেষ্টার তারিফ করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের পূর্ব বর্ধমান জেলার চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, 'সত্যি এটা একটা অভিনব উদ্যোগ। ড্রাগন ফল পুষ্টিগুণে সম্বৃদ্ধ বলেই শুনেছি। রায়নার মাদানগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পড়ুয়াদের এমন কর্মকাণ্ডের তারিফ করতেই হয়। জেলার অন্য প্রাথমিক স্কুলগুলোর কাছেও এটা একটা নিদর্শন।'

School Students East Burdwan West Bengal Mid day Meal
Advertisment